ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে রাশিয়ার ওপর বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো। তাদের সঙ্গে একজোট হয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আরও অনেক মিত্রদেশ। এতে রাশিয়া অর্থনৈতিকভাবে কিছুটা বিপাকে পড়লেও এর ফল ভুগতে শুরু করেছে বিশ্বপরাশক্তি আমেরিকাও। ইতোমধ্যে এর নজিরও দৃশ্যমান। ইউক্রেন সংকটের জেরে নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম হুহু করে বাড়ছে। বিবিসি জানিয়েছে, বিশ্ববাজারে তেলের বেঞ্চ মার্ক ব্রেন্ট ক্রুডের প্রতি ব্যারেলের দাম ছাড়িয়েছে ১৩৯ ডলার। পরে প্রতি ব্যারেলে তেলের বাড়তি এ দাম গিয়ে স্থির হয়েছে ১৩০ ডলারে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের এ অস্থিরতা প্রভাব ফেলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তেলের বাজারেও। এজন্য শত্রুরাষ্ট্রের কাছেও ধরনা দিতে হচ্ছে বলে গণমাধ্যমের খবরে উঠে এসেছে। জানা গেছে, তেলের বাজারের অস্থিরতায় বিপাকে পড়ে ভেনেজুয়েলায় ছুটছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। শনিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা। নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ইউক্রেন হামলার ঘটনায় রাশিয়াকে একঘরে করতে এখন ভেনেজুয়েলাকেও পাশে চায় যুক্তরাষ্ট্র। শুধু তাই নয়, এরই মধ্যে জ্বালানি তেলের বড় বাজার সৌদি আরবেরও দ্বারস্থ হচ্ছে আমেরিকা। যদিও সৌদি আরব আগে থেকেই আমেরিকার মিত্ররাষ্ট্র। তার পরও ইউক্রেন সংকটের প্রভাবে স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্টের সৌদি আরবে সফরের পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এ সফরে বাইডেন সৌদি কর্তৃপক্ষকে তেলের উৎপাদন আরও বাড়ানোর অনুরোধ জানাবেন বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
যদিও হোয়াইট হাউসের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো সফরের পরিকল্পনা করা হয়নি। এটি বিভিন্ন গুজবের অংশমাত্র।উল্লেখ্য, ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পরাশক্তি রাশিয়া। ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের এ দেশটিতে অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। গতকাল ছিল অভিযানের দ্বাদশতম দিন। ইতোমধ্যে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি নগরী দখল করে নিয়েছেন রাশিয়ার সেনারা। বিভিন্ন নগরীতে হতাহত হয়েছে বহুসংখ্যক মানুষ।
রাশিয়ার দাবি, ইউক্রেনের এ সামরিক অভিযানের অর্থ যুদ্ধ নয়। বরং বিশ্বব্যাপী একটি সম্ভাব্য যুদ্ধ প্রতিহত করার লক্ষ্যে এ অভিযান চালানো হচ্ছে। পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনকে নাৎসিমুক্ত করা, দেশটির নিরস্ত্রীকরণ ও ন্যাটো জোটে ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তি প্রতিহত করার জন্য তিনি এ অভিযান চালাচ্ছেন।