শিরোনাম
শনিবার, ১২ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

ইউক্রেনকে দ্রুত সদস্য করতে নারাজ ইইউ

জ্বালানি নিষেধাজ্ঞায়ও নারাজি

ইউক্রেনকে দ্রুত সদস্য করতে নারাজ ইইউ

ফ্রান্সের ভার্সেই নগরের প্রাসাদে গতকাল ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ২৭টি দেশের নেতারা বৈঠকে বসেন। ধারণা ছিল তাতে ইউক্রেনকে সদস্য করার ইঙ্গিত দেওয়া হবে কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি -এএফপি

ফ্রান্সের অন্যতম আকর্ষণীয় ভার্সাই প্রাসাদে দুই দিনের জন্য বসেছেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ২৭ দেশের নেতারা। প্যারিসের ১২ মাইল পশ্চিমে চকচকে এই প্রাসাদে নেতারা একসঙ্গে বসে ইউক্রেনের প্রতি পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করলেও সে দেশকে দ্রুত ইইউ সদস্য করতে রাজি হলেন না। আর আমেরিকা যে রাশিয়া থেকে জ্বালানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাতেও সায় দিলেন না সংস্থার অনেক নেতা। ভার্সাইয়ে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম দিনে ইউক্রেনের অন্যান্য অনুরোধ ও দাবি মানতে নারাজ ছিলেন না সরকারপ্রধানরা। বিশেষ করে ইইউ সদস্য পদের আবেদনের ক্ষেত্রে ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ পদ্ধতিতে সব প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া চালিয়ে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত নন তারা। তাদের মতে, ইউক্রেন এখনো ইইউ সদস্য পদের সব পূর্বশর্ত পূরণ করতে পারছে না। তাছাড়া এমন প্রক্রিয়া এখনো পর্যন্ত অত্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি। বলকান অঞ্চলের কিছু দেশ বহু বছর ধরে সেই জটিলতার মুখোমুখি রয়েছে। সেসব দেশকে পেছনে ফেলে ইউক্রেন আগেভাগে এমন সুবিধা পেতে পারে না। এমনকি কিছু পূর্বশর্ত পূরণ না করলে আনুষ্ঠানিকভাবে সে দেশকে যোগদানের প্রার্থী হিসেবেও স্বীকৃতি দেওয়া এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। গতকাল সম্মেলনের একটি অধিবেশনের শেষে ক্রোয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আন্দরেস পেনকোভিচ বলেন, ‘কেউই রাতারাতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হতে পারে না।’ সম্মেলনের সভাপতি চার্লস মিশেল কিয়েভের প্রতি সহানুভূতি ও নৈতিক সমর্থন জানিয়ে বলেন, ‘ইউক্রেন ইউরোপীয় পরিবারের সদস্য।’ তবে ইউরোপের ২৭ দেশের এই জোটের অন্য নেতারা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ইউক্রেনকে তড়িঘড়ি ইইউর সদস্য পদ দেওয়া হবে না। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বারবার ইউক্রেনকে ইইউর সদস্য করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছেন এবং এই জোটের পূর্ব ইউরোপের কয়েকটি সদস্য দেশও তার এই আহ্বানের প্রতি সহানুভূতিশীল। ইইউর সম্প্রসারণের জোরালো বিরোধিতাকারী ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট বলেন, ইইউর সদস্য পদ পাওয়ার কোনো ‘দ্রুততম প্রক্রিয়া’ নেই। তবে ইইউ কিয়েভের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, ন্যাটোর মতো ইইউর সদস্য হিসেবে আক্রান্ত হলেও বাকি সদস্যরা সর্বশক্তি প্রয়োগ করে সহায়তা করতে বাধ্য। ইউক্রেনের ওপর হামলার দুই সপ্তাহ পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ সম্পর্কেও আলোচনা করছেন ইইউ নেতারা। দীর্ঘমেয়াদে সে দেশ থেকে জ্বালানি আমদানি বন্ধ করার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করলেও এই মুহূর্তে পেট্রোলিয়াম, গ্যাস ও কয়লার সরবরাহ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে প্রস্তুত নয় কিছু সদস্য দেশ। জার্মানি, অস্ট্রিয়া ও হাঙ্গেরির মতো দেশ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এখনই এর কোনো বিকল্প দেখা যাচ্ছে না। ফলে আমেরিকা যত সহজে রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি বন্ধ করতে পেরেছে, ইউরোপের নিজস্ব স্বার্থে তা আপাতত সম্ভব হচ্ছে না।

সর্বশেষ খবর