বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

এবার রাশিয়ায় যুক্ত হতে চায় ইউক্রেনের দোনেৎস্ক

এবার রাশিয়ায় যুক্ত হতে চায় ইউক্রেনের দোনেৎস্ক

রাশিয়ান গোলা ইউক্রেনের নিকোলাইব শহরের একটি ভবনের এক পাশে ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে গেছে। প্রায়ই ঘটছে এ ধরনের হামলা -এএফপি

গত মাসে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরুর আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ইউক্রেনের দুই বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন করার ঘোষণা দেন। সে সময় তিনি এই দুই অঞ্চলকে রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করার কোনো ঘোষণা দেননি। অঞ্চল দুটিকে স্বাধীন প্রজাতন্ত্র হিসেবে ইউক্রেন থেকে মুক্ত করাই ছিল তখন উদ্দেশ্য। এবার আঞ্চলিক এই খেলায় যুক্ত হয়েছে নতুন মাত্রা। দুই দিন আগে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে নতুন পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছিলেন লুহানস্ক প্রজাতন্ত্রের নেতা লিওনিড পাসেচনিক। তিনি জানান, তারা স্বাধীন নয়, রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে চায়। এ লক্ষ্যে শিগগিরই তারা গণভোটের আয়োজন করতে যাচ্ছেন। এবার একই ঘোষণা দিলেন পূর্ব ইউক্রেনের স্বঘোষিত প্রজাতন্ত্র দোনেৎস্কের নেতারা। ওই অঞ্চলের রুশপন্থি নেতা দেনিস পুশিলিন স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। 

দোনেৎস্ক নিউজ এজেন্সিকে মস্কোপন্থি দেনিস পুশিলিন বলেন, ‘২০১৪ সাল থেকেই আমাদের ইচ্ছা সুস্পষ্ট। আমরা রাশিয়া ফেডারেশনের সঙ্গে যুক্ত হতে চাই। তবে এখন প্রধান লক্ষ্য হলো, দোনেৎস্ক প্রজাতন্ত্রের সাংবিধানিক সীমানা নির্ধারণ করা। এরপর আমরা রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।’

দেনিস পুশিলিনের এমন মন্তব্যের দুই দিন আগেই পূর্ব ইউক্রেনের স্বঘোষিত প্রজাতন্ত্র লুহানস্কের মস্কোপন্থি নেতা লিওনিদ পাসেচনিক জানান, তারা রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে লুহানস্কে গণভোট আয়োজন করবেন। তিনি সে সময় সাংবাদিকদের বলেন, গণভোটে জনগণ তাদের পূর্ণ সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগ করবে।

এর আগে রাশিয়ার দখলকৃত ইউক্রেনের বিচ্ছিন্ন অঞ্চল ক্রিমিয়ায় গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তখন ৯৭ শতাংশ ভোট রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পক্ষে পড়ে। ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেনের বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে আসছে দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের বিদ্রোহীরা। ২০১৪ সালের পর ইউক্রেন অঞ্চল দুটির ওপর নিয়ন্ত্রণ হারায়। এ দুই অঞ্চলকে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেন পুতিন।

এর প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেন সরকার জানিয়েছে, এমন গণভোটের আইনগত ভিত্তি নেই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এমন গণভোট সমর্থন পাবে না। কেননা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে ইউক্রেনের অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করে। দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক রাশিয়ার সীমান্তবর্তী ইউক্রেনের দুই অঞ্চল। কৃষ্ণসাগরের উত্তর তীরে খনিজ সম্পদে (বিশেষত কয়লা) সমৃদ্ধ পাহাড়ঘেরা দোনেৎস্কের একসময় নাম ছিল স্তালিনো। এটি ইউক্রেনের ইস্পাত প্রস্তুতকারি কেন্দ্রগুলোর অন্যতম। এখানকার মোট জনসংখ্যা ২০ লাখ। অনেকেই রুশভাষী। আর লুহানস্কের আগের নাম ভোরোশিলোভগ্রাদ। এটিও একটি শিল্পনগরী। এখানকার জনসংখ্যা ১৫ লাখ। ২০১৪ সালে কিয়েভে বিক্ষোভের মুখে ইউক্রেনের মস্কোপন্থি প্রেসিডেন্ট ভিক্তর ইয়ানুকোভিচ ক্ষমতাচ্যুত হন। সে সময়ই ক্রিমিয়ার পাশাপাশি এই দুই অঞ্চলের রুশপন্থিরা সক্রিয় হয়ে ওঠে।

সর্বশেষ খবর