শুক্রবার, ১ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

রাজনৈতিক জীবন টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে ইমরান

রাজনৈতিক জীবন টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে ইমরান

তারপরও গতকাল ইসলামাবাদে সমাবেশ করেছেন ইমরান খান -এএফপি

১৯৭১ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ছিলেন পাকিস্তান ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়। সে হিসেবে তার খেলোয়াড়ি জীবন ২১ বছর। যেখানে তার বড় সফলতা ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপ জয়। এরপর ইমরান খান দেশটির রাজনীতিতে আসেন ১৯৯৬ সালে। সে হিসেবে তার রাজনীতিক জীবনের বয়স ২৬ বছর। এরমধ্যে সবচেয়ে বড় সফলতা ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়া। কিন্তু এখন বড় ব্যর্থতা হিসেবে দেখা হচ্ছে তার প্রধানমন্ত্রিত্বের মেয়াদ শেষ করতে না পারা। কারণ ইমরান খান সম্ভবত তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অপসারণের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে      পাকিস্তানের বেশ কিছু বিরোধী দল।

গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে অনেকটা ঝড় বয়ে গেছে, যার ধারাবাহিকতায় ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টি (পিটিআই)’র বেশ কয়েকজন সদস্য দল ত্যাগ করেন। এর ফলে অনাস্থা ভোটের ফল বিরোধী দলের পক্ষে আসার সম্ভাবনা বেড়ে গেছে। পাকিস্তানের সংসদে ৩৪২ আসনের মধ্যে ১৭২ ভোট নিয়ে বিরোধী দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেই ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রিত্ব বাতিল হবে। ইমরান খানের জোটের প্রধান শরিক এমকিউএম বুধবার বিরোধী জোটে যোগ দেওয়ার পরই বিরোধী দল সংসদে এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কাগজে কলমে পার্লামেন্টে বিরোধী দলের ভোট এখন ১৭৫, আর সরকারি দলের ১৬৪। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আর দুর্নীতি রোধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৮ সালের জুলাইয়ে ক্ষমতায় আসা ইমরান খান অবশ্য সহজে নিজের অবস্থান ছাড়ছেন না। তিনি এখনও কতটা জনপ্রিয়, তার প্রমাণ হিসেবে রবিবার ইসলামাবাদে বিশাল এক র‌্যালি আয়োজন করেন সাবেক এই ক্রিকেটার।

ওই র‌্যালিতে তিনি তিন বারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর স্বামী আসিফ জারদারির- দিকে ইঙ্গিত করে সমবেত মানুষের প্রতি একটি চিঠি প্রদর্শন করেন, যেটিতে দুর্নীতিগ্রস্ত চোরদের সহায়তায় বিদেশি চক্রান্তের মাধ্যমে তার সরকার উৎখাতের চেষ্টার প্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করেন। তিবে ওই চিঠিতে ঠিক কী রয়েছে, সেটি খোলাসা করেননি। দুর্নীতি বিরোধী স্লোগানে ১৯৯৬ সালের এপ্রিলে প্রতিষ্ঠা করেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ। ক্ষমতা পেতে সময় লাগে ২২ বছর। কিন্তু এখন তার বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ। পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাসে এর আগে দুইবার প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়েছে। তবে সেই দুইবারই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীরা - ১৯৮৯ সালে বেনজীর ভুট্টো এবং ২০০৬ সালে শওকত আজিজ - দায়িত্বে থেকে যেতে সক্ষম হন। কিন্তু  এই দফায় ইমরান খান বড় ধরনের পরাজয়ের সম্মুখীন হবেন।

 - এমনকি তার নিজের দলের ভেতরের ভিন্ন মতাবলম্বীরা ভোটাভুটিতে অংশগ্রহণ না করলেও। অবশ্য এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী এবং তার মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা মিত্রদের সঙ্গে বৈঠক করছেন, আর প্রচার করছেন যে তারা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

সর্বশেষ খবর