শনিবার, ২ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

প্রথমবারের মতো মানুষের পূর্ণ জিনোম সিকুয়েন্স প্রকাশ

প্রথমবারের মতো মানুষের পূর্ণ জিনোম সিকুয়েন্স প্রকাশ

অবশেষে মানবদেহের পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকুয়েন্স উদ্ধার করতে সক্ষম হলেন বিজ্ঞানীরা। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল জিউম্যান জিনোম রিসার্চ ইনস্টিটিউট এ তথ্য জানিয়েছে। এর ফলে এখন মানবদেহে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টিকারী মিউটেশন ও জিনগত পরিবর্তনের কারণ খুঁজতে সহজ হবে। ২০০৩ সালে গবেষকরা মানব জিনোমের সম্পূর্ণ ক্রম হিসেবে কী বিল করা হয়েছিল তা উন্মোচন করেছিলেন। কিন্তু এর প্রায় আট ভাগ সম্পূর্ণরূপে পাঠোদ্ধার করা হয়নি, কারণ এতে ডিএনএর অত্যন্ত পুনরাবৃত্তিমূলক অংশ ছিল যা বাকিগুলোর সঙ্গে মেশানো কঠিন ছিল। বিজ্ঞানীদের একটি কনসোর্টিয়াম সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় এটির সমাধান করেছে। পুরো সিকুয়েন্সের গবেষণা পত্রটি গত বছর পিয়ার রিভিউয়ের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রকাশিত হয়। ন্যাশনাল জিউম্যান জিনোম রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ইরিক গ্রিন বলেন, ‘মানব জিনোমের সম্পূর্ণ সিকোয়েন্স উন্মোচন করাটা সত্যিই এক যুগান্তকারী সাফল্য, যার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো আমাদের ডিএনএ ব্লুু-প্রিন্টের সামগ্রিক চিত্রের দেখা মিলবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এসব তথ্য ভিত্তিমূল স্থাপনকারী, যা মানুষের জিনোমের সূক্ষ্ম কার্যক্রম বোঝার প্রচেষ্টাকে সাহায্য করবে। মানুষের বিভিন্ন রোগের জেনেটিক কার্যকরণ বিশ্লেষণের গবেষণাকেও তা শক্তিশালী করবে।’ কনসোর্টিয়ামের সম্পূর্ণ সংস্করণটি ৩.০৫৫ বিলিয়ন বেস জোড়া, যে ইউনিটগুলো থেকে ক্রোমোজোম এবং আমাদের জিন তৈরি করা হয় এবং ১৯ হাজার ৯৬৯টি জিন যা প্রোটিনগুলোকে এনকোড করে।

এ জিনগুলোর মধ্যে গবেষকরা প্রায় দুই হাজার নতুন জিন শনাক্ত করেছেন। এর মধ্যে বেশিরভাগই অক্ষম, কিন্তু ১১৫টি এখনো সক্রিয় থাকতে পারে। বিজ্ঞানীরা প্রায় ২ মিলিয়ন অতিরিক্ত জেনেটিক বৈকল্পিকও খুঁজে পেয়েছেন, যার মধ্যে ৬২২টি চিকিৎসাগতভাবে প্রাসঙ্গিক জিনে উপস্থিত ছিল।

কনসোর্টিয়ামটিকে টেলোমেরে-টু-টেলোমেরে নামে ডাকা হয়েছিল, সব ক্রোমোজোমের প্রান্তে পাওয়া কাঠামোর নামানুসারে এ নামকরণ।

গবেষক দলের অন্যতম প্রতিনিধি অ্যাডাম ফিলিপি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ভবিষ্যতে কারও জিনোম সিকুয়েন্স করা হলে আমরা তাদের ডিএনএর সব ভ্যারিয়েন্ট চিহ্নিত করতে পারব। এর ফলে তাদের স্বাস্থ্যসেবা পরামর্শ দেওয়াও সহজ হবে।’ তার মন্তব্য, শতভাগ জিনোম সিকুয়েন্স করা নতুন চশমা চোখে পরার মতোই। এখন আমরা পরিষ্কারভাবে সব দেখতে পারছি। এর সবটাই বুঝে ওঠতে আমরা এখন আরও এক ধাপ এগিয়ে।

সর্বশেষ খবর