বুধবার, ৬ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বাড়াল যুক্তরাষ্ট্র

রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বাড়াল যুক্তরাষ্ট্র

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের কারণে দেশটি থেকে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও কয়লা আমদানি নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত মাসে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়। তাই রাশিয়ার তেল, গ্যাস তথা জ্বালানির ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনার চেষ্টা করছে ইউরোপ। কিন্তু সম্পূর্ণ উল্টো অবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের। দেশটি গত সপ্তাহে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেলের আমদানি ৪৩ শতাংশ বা প্রতিদিন ১ লাখ ব্যারেল বাড়িয়েছে। রবিবার রাশিয়ার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির নিরাপত্তা পরিষদের উপসচিব মিখাইল পপভ। তিনি মন্তব্য করেন, নিজের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র কাউকে ছাড় দেয় না। তাইতো তারা ইউরোপীয় মিত্রদের তোয়াক্কা না করেই নিজেদের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নিজেরা বেশি জ্বালানি নিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘এ ছাড়াও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হিসেবে অনুমোদন দিয়ে, ওয়াশিংটন তার কোম্পানিগুলোকে রাশিয়া থেকে খনিজ সার আমদানির অনুমতি দিয়েছে।’

 

রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্ব শুরু হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় মিত্ররা রাশিয়া থেকে তেল আমদানি নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য আমেরিকা ও যুক্তরাজ্য উভয়ের কাছ থেকেই চাপের সম্মুখীন হচ্ছে ইউরোপ। যদিও ইউরোপ অঞ্চল তার মোট জ্বালানি তেলের প্রায় ৪০ শতাংশের জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল। এ বছরের শেষ নাগাদ রাশিয়ার কাছ থেকে তেল আমদানি বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটেন। অন্যদিকে, মার্কিন ট্রেজারি অফিস রাশিয়ার কাছ থেকে তেল এবং কয়লা আমদানির চুক্তি শেষ করার সময়সীমা নির্ধারণ করেছে আগামী ২২ এপ্রিল।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রপ্তানি গত মাসে প্রায় ১৬ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে বলে উঠে এসেছে রিফিনিটিভের প্রাথমিক তথ্যে। ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়ার কাছ থেকে গ্যাস আমদানি কমানোর চেষ্টার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের এলএনজির চাহিদা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

তথ্য অনুযায়ী, ইউরোপ টানা চার মাস ধরে মার্কিন এলএনজির শীর্ষ আমদানিকারক। যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানির প্রায় ৬৫ শতাংশই এখন কিনে নিচ্ছে ইউরোপীয় দেশগুলো। চলতি বছর ইউরোপে কমপক্ষে ১৫ বিলিয়ন ঘনমিটার অতিরিক্ত তরল প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার জ্বালানির ওপর থেকে ওই অঞ্চলের নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে ইউরোপের সঙ্গে এক যৌথ চুক্তির পর গত ২৫ মার্চ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ ঘোষণা দিয়েছে। এ ছাড়া, হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এলএনজির এই অতিরিক্ত পরিমাণ সামনের দিনগুলোতে আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। চলমান এই জ্বালানি ইস্যুতে বিশ্লেষকরা বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট এবং রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞার সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপীয় মিত্রদের ফাঁদে ফেলে নিজের স্বার্থ সর্বোচ্চ পরিমাণে হাসিল করে নেওয়ার অভিযোগও আনা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ওপরে। অনেকের ধারণা, রাশিয়ার কাছ থেকে সস্তায় তেল কিনে, সেই তেল আবার বেশি দামে ইউরোপের দেশগুলোতে পুনরায় বিক্রি করে মুনাফা করতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গ্লোবাল টাইমস

সর্বশেষ খবর