রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

ভারতে সিএএ বিধি তৈরির জন্য সরকার ফের সময় চেয়েছে

২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর ভারতের সংসদের উভয় কক্ষেই পাস হয় ‘সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল’ (সিএবি)

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন’ (সিএএ) চালুর আগে যে বিধি প্রণয়নের (রুল ফ্রেম) কাজ করতে হয়, সে বিধি প্রণয়নের জন্য অতিরিক্ত ছয় মাস সময় চেয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

দেশটির সংসদের লোকসভা ও রাজ্যসভার সিএএ সম্পর্কিত ‘সাবঅর্ডিনেট লেজিসলেশন কমিটি’কে চিঠি লিখে নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিধি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য ৯ অক্টোবর পর্যন্ত অতিরিক্ত ছয় মাস সময় চেয়েছে মন্ত্রণালয়। কারণ বিধি প্রণয়ন না হলে এ আইন বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। সাধারণত যে কোনো নতুন আইন বা সংশোধিত আইন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেই বিধি প্রণয়ন বাধ্যতামূলক এবং ছয় মাসের মধ্যেই ওই কাজ হয়ে যায়। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে বিধি প্রণয়নের কাজ না হলে সংসদের সাবঅর্ডিনেট লেজিসলেশন কমিটির কাছ থেকে অতিরিক্ত সময় চাওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে দেশজুড়ে কভিড-১৯ মহামারি এবং স্পর্শকাতর এ আইনের বিধি প্রণয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আরও আলোচনার প্রয়োজন আছে বলে জানিয়ে শেষবার চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি অতিরিক্ত তিন মাস সময় চাওয়া হয়েছিল। সেই মেয়াদ শেষে ফের অতিরিক্ত ছয় মাস সময় চাওয়া হলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে। এ নিয়ে এ আইন সম্পর্কিত বিধি প্রণয়নের জন্য পাঁচবার অতিরিক্ত সময় চাওয়া হলো বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক   কর্মকর্তা।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর ভারতের সংসদের উভয় কক্ষেই পাস হয় ‘সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল’ (সিএবি)। ১২ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের স্বাক্ষরের পর তা আইনে পরিণত হয়। এরপর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানান, ‘২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে সিএএ কার্যকর হচ্ছে।’ কিন্তু রাজনৈতিক ও করোনা মহামারি পরিস্থিতির কারণে সিএএর নিয়মনীতি নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া থমকে যায়।

নতুন এ নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে- ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হওয়া যেসব মানুষ (হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি) ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।

কিন্তু বিতর্কিত এ আইনের বিরোধিতায় সরব হয় কংগ্রেস, তৃণমূলসহ একাধিক রাজনৈতিক দল ও বেশকিছু সংগঠন। তাদের অভিমত, এ আইন মুসলিমবিরোধী ও অসাংবিধানিক, ধর্মের ভিত্তিতে কোনোভাবেই এ আইন মেনে নেওয়া না। স্বাভাবিক কারণেই ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ওই নতুন নাগরিকত্ব আইন পাস হওয়ার পরই ভারতজুড়ে বিক্ষোভ, সহিংসতা শুরু হয়। তাতে একাধিক মানুষের মৃত্যুও হয়।

সর্বশেষ খবর