বুধবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

পশ্চিমাদের তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধের হুমকি রাশিয়ার

পশ্চিমাদের তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধের হুমকি রাশিয়ার

চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটে পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকিকে ‘ছোট’ করে না দেখার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। অর্থাৎ আর রাখঢাক না রেখেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিষয়ে বিশ্বকে সাবধান করল রাশিয়া। রুশ টেলিভিশনে তিনি বলেন, এই ঝুঁকি এখন কনসিডারেবল বা বিবেচনাযোগ্য। একই সঙ্গে ইউক্রেনকে অস্ত্র দেওয়া নিয়েও পশ্চিমাদের সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি। ল্যাভরভ বলেন, ইউক্রেনে পশ্চিমা দেশগুলো যে অস্ত্র পাঠাচ্ছে তাতে হামলা চালানোর বৈধতা রাশিয়ার আছে। এ খবর দিয়েছে জেরুজালেম পোস্ট।

ন্যাটোর মাধ্যমে ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহকে তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের ‘প্রক্সি যুদ্ধ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সাক্ষাৎকারে তাকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ এড়ানোর গুরুত্ব এবং বর্তমান পরিস্থিতি ১৯৬২ সালের কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের সঙ্গে তুলনীয় কি না, সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা  হয়েছিল। পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে প্রশ্ন করা    হলে তিনি এলন, ‘ঝুঁকি এখন যথেষ্ট।’ তার মন্তব্য,  ‘আমি সেই ঝুঁকিকে কৃত্রিমভাবে বাড়াতে চাই না। অনেকেই     হয়তো এটি পছন্দ করবেন। বিপদ কিন্তু গুরুতর এবং বাস্তব। এই ঝুঁকিকে আমাদের অবশ্যই ছোট করে দেখা উচিত নয়।’

এদিকে এই সাক্ষাৎকারের পর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা। পারমাণবিক যুদ্ধের এই ভয় দেখানোকে তিনি রাশিয়ার দুর্বলতা হিসেবে দেখছেন। ল্যাভরভের সাক্ষাৎকার প্রচারিত হওয়ার পর কুলেবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে লিখেছেন, ‘ইউক্রেনকে সমর্থন করা থেকে বিরত রাখতে, বিশ্বকে ভয় দেখানোর শেষ আশাটিও হারিয়েছে রাশিয়া। এর অর্থ হলো মস্কো পরাজয় অনুভব করছে।’

রবিবার কিয়েভ সফরকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ও প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন ইউক্রেনের জন্য আরও সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। পেন্টাগন বলছে, প্যাকেজের মধ্যে হাউইৎজার, ট্যাংক এবং গ্রেনেড লাঞ্চারের জন্য আর্টিলারি গোলাবারুদ অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

এদিকে ওয়াশিংটনে মস্কোর রাষ্ট্রদূত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অস্ত্রের চালান সরবরাহ বন্ধ করতে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে সংঘাতকে আরও উসকে দিচ্ছে পশ্চিমা বিশ্ব। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ বলেন, ‘ন্যাটো মূলত প্রক্সির (তৃতীয় পক্ষ) মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। তারা সেই প্রক্সিকে অস্ত্রের জোগান দিচ্ছে। যুদ্ধ মানে যুদ্ধই।’

উল্লেখ্য, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের ২ মাস পূর্ণ হলো। ১৯৪৫ সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটিই ইউরোপীয় কোনো দেশের বিরুদ্ধে সব থেকে বড় কোনো আক্রমণ। ইউক্রেনের কেমিন্না শহর দখল : ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দনবাসের কেমিন্না শহরের পতন হয়েছে বলে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। তারা জানিয়েছে, রাশিয়ার বাহিনীগুলো উত্তর ও দক্ষিণ দিক থেকে স্লোভিয়নস্ক ও ক্রামাতোর্স্কের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে ইজুম শহরের দক্ষিণে ইউক্রেনীয় বাহিনীর সঙ্গে তাদের তীব্র লড়াই শুরু হয়েছে।

বিবিসি জানিয়েছে, রাশিয়ার বাহিনীগুলো প্রায় ১৮ হাজার বাসিন্দার শহর কেমিন্না নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে এ খবর আগেই প্রকাশিত হয়েছিল। রাশিয়ার বাহিনীগুলো দনবাস অঞ্চলে অত্যন্ত সুরক্ষিত ইউক্রেনীয় অবস্থানগুলো ঘিরে ফেলার চেষ্টা করছে, এমন ধারণা পাওয়ার কথা জানিয়েছে তারা।

সর্বশেষ খবর