পরমাণু অস্ত্র নিয়ে সম্প্রতি মস্কোর কথাবার্তায় ব্যাপক তেজ দেখা গেলেও তারা তা ব্যবহার করতে পারে এমন হুমকি আছে বলে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে না। এক ঊর্ধ্বতন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা শুক্রবার এ কথা বলেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ‘তাদের পারমাণবিক সক্ষমতার ওপর প্রতিদিন নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছি আমরা, সর্বোচ্চ যা আমরা করতে পারি। পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কোনো হুমকি আছে বলে আমাদের মূল্যায়ন বলছে না, ন্যাটো ভূখণ্ডের জন্যও কোনো হুমকি নেই,’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের এমনটাই বলেছেন তিনি। এর আগে সোমবার রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছিলেন, ইউক্রেন নিয়ে পারমাণবিক সংঘাতের ঝুঁকি যে বাড়ছে তাকে খাটো করে দেখা পশ্চিমা দেশগুলোর উচিত হবে না। চলতি মাসের শুরুর দিকে রাশিয়া জানিয়েছিল, সম্প্রতি পরীক্ষিত সারমাত আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রটি তারা শরতের মধ্যেই মোতায়েনের চিন্তাভাবনা করছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রেও আঘাত হানতে সক্ষম বলে দাবি মস্কোর। ইউক্রেনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আক্রমণ শুরুর সময় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যে ভাষণ দিয়েছিলেন, তা-ই পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি নিয়ে পশ্চিমাদের উদ্বেগ বাড়িয়ে দেয়। ওই ভাষণে পুতিন মস্কোর পারমাণবিক শক্তির দিকে ইঙ্গিত করে কেউ রাশিয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ালে তাকে ‘এমন পরিণতি ভোগ করতে হবে’ যে সে তার ‘ইতিহাসে কখনোই এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়নি’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। কয়েকদিন আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, ইউক্রেনে রুশ সামরিক বাহিনীর আরও ব্যর্থতা পুতিনকে সেখানে ‘ট্যাকটিকাল’ পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের দিকে ঠেলে দেবে বলে মনে করছেন না তিনি। এপ্রিলের শুরুর দিকে মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পরিচালক উইলিয়াম বার্নস বলেছিলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘ট্যাকটিকাল’ বা ‘কমবিধ্বংসী’ পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকিকে হালকাভাবে নেওয়া ঠিক হবে না। তবে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের উদ্বেগকে জোরালো করার মতো বাস্তব প্রমাণ সিআইএ খুব বেশি দেখছে না বলে সে সময় জানিয়েছিলেন তিনি। ইউক্রেনে নয় সপ্তাহ ধরে চলা যুদ্ধে দেশটির বহু শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, কয়েক হাজার লোক নিহত ও ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। মস্কো বলছে, প্রতিবেশী দেশটিকে ‘নিরস্ত্র’ ও ‘নব্যনাৎসীমুক্ত’ করতেই তারা এই ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ চালাচ্ছে।