শনিবার, ১৪ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

রুবল অ্যাকাউন্ট খুলল আরও ১০টি ইউরোপীয় সংস্থা

রুবল অ্যাকাউন্ট খুলল আরও ১০টি ইউরোপীয় সংস্থা

রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরু করেছে আর রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘অর্থনৈতিক যুদ্ধ’ শুরু করেছে আমেরিকা ও ইউরোপ। তবে আপাতত অর্থনৈতিক যুদ্ধে এক ধাপ এগিয়ে গেছে রাশিয়া। কারণ রাশিয়ার তেল-গ্যাস ছাড়া এখনো চলতে পারছে না ইউরোপ।

মূলত ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোকে বেকায়দায় ফেলতে জেলেনস্কি সরকারকে অস্ত্র দিচ্ছে ওয়াশিংটন ও ব্রাসেলস। পাল্টা জীবাশ্ম জ্বালানিকে হাতিয়ার করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আর এতে ফলও মিলতে শুরু করেছে। এবার পুতিনের দাবি মেনে রুশ তেল কেনার জন্য একপ্রকার বাধ্য হয়ে গ্যাজপ্রম ব্যাংকে রুবল অ্যাকাউন্ট খুলেছে দশটি ইউরোপীয় সংস্থা।

ব্লুমবার্গ নিউজ জানায়, এখনো পর্যন্ত সব মিলিয়ে ইউরোপের ২০টি সংস্থা গ্যাজপ্রম ব্যাংকে রুবল অ্যাকাউন্ট খুলেছে। নতুন খাতা খোলার আবেদন জানিয়েছে ইউরোপের আরও ১৪টি জ্বালানি কোম্পানি। এর ফলে রাশিয়ার হাতে ডলার হয়ে নয়, সরাসরি বিপুল অঙ্কের অর্থ আসবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। যে মস্কোর আয়ে রাশ টানার লক্ষ্য ছিল আমেরিকা ও ইউরোপের। কিন্তু অপরিশোধিত তেল ও গ্যাস রপ্তানি করে আর্থিক নিষেধাজ্ঞার প্রভাব অনেকটাই খর্ব করতে পারছেন পুতিন। ফলে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে এ মুহূর্তে তাঁকে কোনো সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে না। ফেব্রুয়ারির ২৪ তারিখ ইউক্রেনে হামলার পর রাশিয়ার ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বন্ধ করে দেয় অর্থ লেনদেনের ব্যবস্থা সুইফট। ফলে বিদেশে সঞ্চিত প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলারের মুদ্রাভাণ্ডারে হাত দিতে পারছে না মস্কো। তারপর থেকেই, জ্বালানির দাম রুবলে মেটানোর দাবি জানিয়ে আসছে পুতিন প্রশাসন। গত এপ্রিলে পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় গ্যাসের জোগান বন্ধ করে দেয় রাশিয়া। রুশ সরকারি তেল ও গ্যাস উৎপাদনকারী সংস্থা ‘গ্যাজপ্রম’ জানিয়ে দেয়, রুবল না মেলায় পড়শি দুই দেশে গ্যাসের জোগান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরপর তাদের প্রস্তাব না মানলে গোটা ইউরোপে গ্যাসের জোগান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এবং মুখে প্রতিবাদ করলেও শর্ত মানতে বাধ্য হয়েছে রুশ জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল জার্মানি ও অস্ট্রিয়া। জার্মান সংস্থা ইউনিপার আগেই জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই ইউরোপে একটি রুশ ব্যাংকের শাখায় তারা অ্যাকাউন্ট খুলছে। তার মাধ্যমেই জ্বালানির  দাম মেটানো হবে। একই বার্তা এসেছে অস্ট্রিয়ার জ্বালানি সংস্থা ওএমভিজেএফের তরফেও।      সবমিলিয়ে আপাতত পরিস্থিতি পুতিনের পক্ষেই বলে মত অনেকের। তবে সম্প্রতি জি-৭ দেশগুলো জানিয়েছে, রুশ এনার্জির প্রতি নির্ভরতা ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হবে আমাদের।

ধাপে ধাপে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করাও বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে এটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। রুশ তেলের বিকল্প তৈরি করে নেওয়ার সময় দিতে হবে পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলোকে। ফ্রান্স, কানাডা, জার্মানি, ইতালি, জাপান, ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্র- এ সাতটি দেশের ফোরাম হলো জি-৭।

পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার চাপ রাশিয়া সামাল দিচ্ছে বলে জানান পুতিন। তিনি বলেন, রাশিয়া আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বাহ্যিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। এ জন্য তিনি রাশিয়ার সাম্প্রতিক বছরগুলোর সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতিকে বাহবা দেন। একই সঙ্গে তিনি রাশিয়ার অর্থনৈতিক সার্বভৌমত্বের পাশাপাশি প্রযুক্তি ও খাদ্যনিরাপত্তা জোরদারে পদ্ধতিগত সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন।

সর্বশেষ খবর