রবিবার, ২২ মে, ২০২২ ০০:০০ টা
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি

তৃণমূল কংগ্রেসের এক প্রার্থীর নাগরিকত্ব নিয়ে শোরগোল

কলকাতা প্রতিনিধি

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার নির্বাচনে বাংলাদেশি নাগরিক আলোরানী সরকার তৃণমূল কংগ্রেসের মনোনীত প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে রাজনৈতিক শোরগোল পড়ে গেছে। বলা হচ্ছে, ২০২১ সালের মার্চ-এপ্রিলে অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বনগাঁও দক্ষিণ আসনে তাঁকে তৃণমূলের প্রার্থী করা হয়। তবে তিনি ভোটে হেরে গেছেন। আদালতে ওই নির্বাচনী ফলকে চ্যালেঞ্জ করে তিনিই বিপাকে পড়েন।

আলোরানী যে মামলা করেন শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্ট তা খারিজ করে দেয়। বিচারপতি বিবেক চৌধুরীর এক সদস্যের বেঞ্চে  শুনানির সময় আলোরানীর বিরুদ্ধে ভোটে বিজয়ী বিজেপির স্বপন    মজুমদারের আইনজীবী অরিন্দম পাল বলেন, আলোরানী সরকারের স্বামী ডা. নরেন্দ্রনাথ সরকার বাংলাদেশের বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের মেডিসিনের অধ্যাপক। আদালতে আলোরানী সরকারের একটি বাংলাদেশি পরিচয়পত্রও দাখিল করা হয়, যেখানে তাঁর নম্বর ৭৩০৭৬৪৫৫৭৭।

আদালতের পর্যবেক্ষণ হলো : আলোরানী কোনোভাবেই নিজেকে একজন ভারতীয় নাগরিক বলে দাবি করতে পারেন না, কেননা ভারতীয় আইন কোনো দ্বৈত নাগরিকত্বকে অনুমতি দেয় না। এ   ইস্যুতে দেশটির নির্বাচন কমিশনকে আলোরানীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানায় আদালত।

আলোরানী সরকারের আইনজীবী আদালতে বলেন, ‘১৯৬৯ সালে তাঁর মক্কেলের জন্ম রাজ্যটির হুগলী জেলার বৈদ্যবাটিতে হলেও ডা. নরেন্দ্রনাথ সরকারকে বিয়ে করার পর তিনি বাংলাদেশি নাগরিকত্ব লাভ করেন। কিন্তু দাম্পত্য কলহের কারণে ১৯৮০ সালে তিনি স্বামীর ঘর ছড়ে পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন।’ আইনজীবীর দাবি, ‘২০১২ সালে বাংলাদেশের ভোটার লিস্টে আলোরানীর নাম ভুল করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০২০ সালে এ বিষয়টি তাঁর নজরে আসার পরই ঢাকার নির্বাচন কমিশনে ওই নাম বাতিল করার আবেদনও জানান আলোরানী।’

আদালতে দাখিলকৃত তথ্যের ভিত্তিতে আদালত জানায়, ‘এটা বলা   যায় যে আলোরানীর বাবা-মা বাংলাদেশে বাস করতেন এবং ছোটবেলাতেই তিনি তাঁর চাচাদের সঙ্গে ভারতে চলে আসেন। আর এর অর্থ তাঁর জন্ম বাংলাদেশে।’ আদালতের ওই নির্দেশিকায় আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশের ভোটার তালিকা থেকে কবে আলোরানীর নাম বাতিল করা হয়েছে সেই দিনটিও এখন পরিষ্কার নয়।’ আলোরানী গতকাল গণমাধ্যমকে জানান, ‘১৯৬৯ সালে আমার এখানে জন্ম। আমার বাবা, চাচারা এখানেই থাকেন। তাই কেউ যদি আমাকে বাংলাদেশি বলেন, তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমি এ রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে যাচ্ছি।’ টুইট করে বিজেপির বিধায়ক ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ২৯ এ ধারার ৫ উপধারা অনুসারে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধীকরণের অন্যতম শর্ত হলো ভারতীয় সংবিধানের প্রতি আনুগত্য বজায় রাখা ও ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতাকে সংরক্ষিত   করা। একজন বিদেশি নাগরিককে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করানোর চক্রান্ত এ আইনি বিধি লঙ্ঘন করেছে।’ তিনি অবিলম্বে তৃণমূলের নিবন্ধীকরণ বাতিলের দাবি জানান।

সর্বশেষ খবর