বুধবার, ২৫ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

উইঘুর নির্যাতনের চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করল বিবিসি

চীনের বন্দিশিবিরে আটক সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিম নির্যাতনের চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। গতকাল প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, চীনের শিনজিয়াং পুলিশের কম্পিউটার সার্ভার থেকে উইঘুর নির্যাতনের তথ্য হ্যাক হয়। আর এতে মিলেছে হাজার হাজার মানুষের ছবি, যাদেরকে বিভিন্ন পুনঃশিক্ষণ কেন্দ্রে আটকে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া যারা এখান থেকে পালাতে চায় তাদেরকে সরাসরি গুলির নির্দেশনার প্রমাণও পাওয়া গেছে। বন্দিশিবিরে বিভিন্নভাবে চীনের নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা নির্যাতিত হাজারের বেশি উইঘুরের ছবি প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমটি। চলতি বছরের প্রথম দিকে চীনের উইঘুর মুসলিমদের নিয়ে বেশ কিছু তথ্য-উপাত্ত হাতে পায় বিবিসি। এরপর শুরু হয় তদন্ত। দীর্ঘ তদন্তের পর অবশেষে তা প্রকাশ করল সংবাদমাধ্যমটি।

বর্তমানে চীন সফরে রয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার মিশেল ব্যাচলেট। ছয় দিনের এ সফরের মধ্যে তিনি শিনজিয়াংও যাবেন। ধারণা করা হচ্ছে, চীন সরকারের কঠিন নিয়ন্ত্রণের মধ্য থেকেই তাকে সেখানকার পরিস্থিতি দেখানো হবে। তার এই সফরের সময়ই বিবিসি এ রিপোর্ট প্রকাশ করল। হ্যাক হওয়া ওই ফাইলগুলোতে চীনের পুনঃশিক্ষণ কেন্দ্র সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। উইঘুর বন্দিশিবিরটি চীনের প্রথাগত কারাগার থেকে আলাদা। চীনের দাবি, ২০১৭ সালে এই পুনঃশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো নির্মাণ করা হয়েছে এবং এগুলো স্কুল ছাড়া কিছুই নয়। ওই নথিগুলো থেকে জানা গেছে, এই কেন্দ্রগুলো মূলত উইঘুর পরিচয়, সংস্কৃতি এবং ইসলামিক বিশ্বাসকে টার্গেট করে নির্মাণ করা হয়েছে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর অধীনেই এসব শিবির পরিচালিত হয় বলেও জানিয়েছে বিবিসি। হ্যাক হওয়া ফাইলগুলোতে ৫ হাজারের বেশি উইঘুরের ছবি রয়েছে। এসব ছবি ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাসের মধ্যে তোলা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২ হাজার ৮৮৪ জন আটক রয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। চীনের দাবি এসব কেন্দ্রে ‘শিক্ষার্থীরা’ নিজের ইচ্ছায় থাকছে। যদিও এমন দাবির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি ওই নথিতে। ছবিগুলোতে দেখা গেছে, অনেকের সঙ্গেই লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে আছে পুলিশ। যদিও চীনের দাবি তাদের সঙ্গে কোনো জবরদস্তি করা হয়নি।

২০১৯ সালে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই জানিয়েছিলেন, এসব পুনঃশিক্ষণ কেন্দ্র উইঘুরদের সন্ত্রাসবাদ থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করছে। যদিও বাস্তবে দেখা গেছে, শুধু ইসলামিক জীবনযাপন করার কারণে কিংবা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ সফরের কারণেই কাউকে কাউকে এনে এসব শিবিরে রাখা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর