ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের ১১২ দিন পেরিয়ে গেল। প্রতিদিন মৃতের সংখ্যা বাড়লেও ছাড় দিতে রাজি নয় কোনো পক্ষই। যদিও মস্কোর সমস্যা বাড়িয়ে কিয়েভের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা ও ন্যাটো সামরিক জোট। এ অবস্থায় যুদ্ধকে আরও ঘোলাটে করে তুলেছে ইউক্রেনে ন্যাটোর দেওয়া অস্ত্রভান্ডারে মিসাইল হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেনের পশ্চিমাংশে লিভিভ শহরে ইউক্রেনীয় বাহিনীর একটি গুদামে আছড়ে পড়ে একের পর এক রুশ মিসাইল। ওই গুদামে ন্যাটোর দেওয়া অস্ত্রশস্ত্র রাখা ছিল। বিশেষ করে সেখানে মজুদ ছিল আমেরিকায় তৈরি এম-৭৭৭ হাউৎজার কামানের গোলা। জানা গেছে, লিভিভ শহরে আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরোপ থেকে আসা অস্ত্রের বিশাল ভান্ডার মজুদ করেছে জেলেনস্কি বাহিনী। এখানে রয়েছে কামানের গোলা, জ্যাভলিনের মতো অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইলসহ আরও অনেক অস্ত্র। ফলে এ হামলা ইউক্রেনের জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, যুদ্ধের শুরু থেকেই ইউক্রেনকে অস্ত্র দেওয়ার বিরোধিতা করে এসেছে রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট পুতিন মন্তব্য করেছিলেন, আমেরিকা ও ন্যাটো কিয়েভেকে অস্ত্র দিলে ফল ভুগতে হবে।
সেভেরোদোনেৎস্কের ৮০ শতাংশ রুশ নিয়ন্ত্রণে : ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর সেভেরোদোনেৎস্কের ৮০ শতাংশই এখন রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। লুহানস্কের গভর্নর সেরহি গাইদাই এ কথা বলেছেন। শহরটির আজত রাসায়নিক কারখানায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়া ইউক্রেনীয় সেনাদের অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া। লাগাতান গোলাবর্ষণের কারণে বেসামরিক নাগরিকদের এখন আর বলতে গেলে সরিয়ে আনা সম্ভব নয় বলে মঙ্গলবার স্বীকার করেন লুহানস্কের গভর্নর। তিনি বলেন, আজত রাসায়নিক কারখানায় এখনো প্রায় ৫০০ বেসামরিক নাগরিক আশ্রয় নিয়ে আছেন।রয়টার্স জানিয়েছে, রাসায়নিক কারখানায় আটকে পড়া ইউক্রেনীয় বাহিনীর সদস্যদের আজ বুধবার সকাল নাগাদ অস্ত্র সমর্পণ করতে বলেছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিতে নিজেদের অবস্থান আরও জোরদার করছে দেশটি। রাশিয়ার ন্যাশনাল ডিফেন্স ম্যানেজমেন্ট সেন্টারের প্রধান মিখাইল মিজিনৎসেভ বলেছেন, যোদ্ধাদের উচিত তাদের নির্বোধ প্রতিরোধ লড়াই বন্ধ করা। (মস্কো সময়) সকাল ৮টা থেকে তাদের অস্ত্র সমর্পণ করা উচিত।
এদিকে যুদ্ধের মধ্যেই নতুন সমস্যার মধ্যে পড়েছে ইউক্রেন। নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন সে দেশের সাধারণ মানুষ। খাদ্যের অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তারা। এ ছাড়াও যত্রতত্র মানুষকে কবর দিয়েছে রাশিয়া। সেই মৃতদেহের জীবাণু ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। তাতেও আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ।