রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পরিকল্পনা যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধের সমান। ঠিক এই ভাষাতেই মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে সতর্ক করল জাতিসংঘ। জান্তা সরকারের তরফে ৩ জুন বলা হয়েছিল যে, তারা অং সান সুচির দলের একজন প্রাক্তন আইন প্রণেতা এবং একজন বিশিষ্ট গণতন্ত্র কর্মীকে মৃত্যুদণ্ড দেবে। যা ১৯৯০ সালের পর দেশের প্রথম বিচারিক মৃত্যুদণ্ড হবে।
কারণ উভয়েই সন্ত্রাসবাদের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন এএফপিকে বলেছেন, সাবেক এমপি ফিও জেয়া থাও এবং গণতন্ত্র কর্মী কো জিমিসহ চারজন যাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল কারাগারের পদ্ধতি অনুসারে তাদের ফাঁসি দেওয়া হবে। মিয়ানমারের জন্য জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্ত ব্যবস্থার প্রধান নিকোলাস কৌমজিয়ান বলেছেন, তিনি এই মামলাটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।সূত্র, এনডিটিভি
কৌমজিয়ান বিচারের বিষয়ে বলেছেন, প্রামাণ্য তথ্য থেকে দৃঢ়ভাবে বোঝা যাচ্ছে যে আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে দোষী সাব্যস্তদের মৌলিক অধিকার স্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করা হয়েছিল। গোটা শুনানি প্রক্রিয়ায় জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। তাঁর মতে, একটি ন্যায্য বিচারের মৌলিক প্রয়োজনীয়তাগুলো পূরণ না করে মৃত্যুদণ্ড বা এমনকি আটকের সাজা শোনানো মানবতাবিরোধী বা যুদ্ধাপরাধের সমান। গত বছর ক্ষমতা দখলের পর জান্তা সরকার দমন-নিপীড়নের অংশ হিসেবে ভিন্নমতাবলম্বীদের বেশ কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।কৌমজিয়ান বলেন, একটি বিচারকে ন্যায্য বলে গণ্য করার জন্য তা সর্বজনীন হওয়া উচিত। বিচারের সময়ে জাতীয় নিরাপত্তার কথাও মাথায় রাখতে হবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে এটা স্পষ্ট যে মামলা চলাকালীন জনসাধারণের কোনো অংশগ্রহণ ছিল না। তাই রায় প্রকাশ্যে ঘোষণা করা হয়নি।
আর তাই এই ট্রাইব্যুনালটি নিরপেক্ষ এবং স্বাধীন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি করেছে। ২০১৮ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল মিয়ানমারের জন্য বিশেষ কার্যক্রম তৈরি করেছিল। এর কাজ হল প্রাক্তন বার্মায় আন্তর্জাতিক অপরাধ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ সংগ্রহ করা এবং ফৌজদারি কার্যক্রমের সুবিধার্থে তাদের নথিভুক্ত করা।