শিরোনাম
শুক্রবার, ৮ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা
বিবিসির দৃষ্টিতে

যেসব কারণে জনসনের পতন

যেসব কারণে জনসনের পতন

প্রায় তিন দশক সময় পর ২০১৯ সালের নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় জয় পায় কনজারভেটিভ দল। যার নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। কিন্তু এত অল্প সময়ের মধ্যে এত জনপ্রিয় একজন প্রধানমন্ত্রী তার এমপিদের সমর্থন হারিয়েছেন এবং পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন। কিন্তু কেন? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি। আপাতত পাঁচটি কারণ খুঁজে পেয়েছে গণমাধ্যমটি। এর মধ্যে প্রধান ও অন্যতম হলো ক্রিস পিনচারের যৌন অসদাচরণ। দুই. করোনাকালে পার্টিগেট কেলেঙ্কারি। তিন. জীবনমানের খরচ এবং ট্যাক্স বৃদ্ধি। চার. ওয়েন প্যাটারসনকে নিয়ে ক্ষোভ। পাঁচ. দৃষ্টিভঙ্গি ও আইডিয়ার অভাব। বিবিসির সাংবাদিক ওয়েন আমোস এ পাঁচটি কারণ উদঘাটন করেছেন।

তিনি লিখেছেন, ২৯ জুন ওই সময়কার এমপি ক্রিস পিনচার লন্ডনে একটি প্রাইভেট সদস্যদের ক্লাবে যোগ দেন। তিনি এ সময় কনজারভেটিভ পার্টির ডেপুটি চিপ হুইপ ছিলেন। নিজের মুখেই তিনি বলেছেন, সেখানে তিনি খুব বেশি মদ পান করেছিলেন এবং তা নিয়ে নিজেই বিব্রত। ওই ক্লাবে দুজন পুরুষকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এরপর আগের বছরগুলোতে তিনি যেসব অপরাধ করেছেন সেগুলোও সামনে চলে আসে। এগুলো একটির সঙ্গে একটি যুক্ত হতে হতে এতটাই ভারী হয়ে ওঠে যে, তাতে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের বিদায়ের পথ করে দেয়। প্রথমত, ডাউনিং স্ট্রিট থেকে বলা হয়, ফেব্রুয়ারিতে ডেপুটি চিপ হুইপ হিসেবে পিনচারকে   নিয়োগ দেন বরিস জনসন। এর আগে তিনি তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট বিশেষ কোনো অভিযোগ সম্পর্কে জানতেন না। কিন্তু দেখা যায় এ বিবৃতি পুরোপুরি সত্য নয়। ফলে মন্ত্রীরা এটাকে ইস্যু করেন।

এর আগে ঘটে যায় পার্টিগেট কেলেঙ্কারি। এ বছরের এপ্রিলে করোনাভাইরাস মহামারিকালে লকডাউন বিধি ভঙ্গ করে গোপনে পার্টি করার জন্য জরিমানা করা হয় প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে। ২০২০ সালের জুনে   তার জন্মদিনের এক পার্টিতে তিনি যোগ দিয়েছিলেন। ওদিকে এ বছরে এসে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে দ্রুতগতিতে। বর্তমানে তা শতকরা ৯.১ ভাগ। এর মধ্যে বেশির ভাগ কারণ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।

এর পর কী ঘটবে : নিয়ম অনুসারে, যুক্তরাজ্যের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী তার পরবর্তী উত্তরসূরি নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকেন, জনসনও থাকবেন। তবে কীভাবে তার উত্তরসূরি নির্বাচিত হবে- তার ওপর নির্ভর করছে তিনি আর কতদিন দায়িত্ব পালন করবেন। দলের প্রধান পদত্যাগ করা মাত্রই, দলীয় সংবিধান অনুসারে নতুন নেতা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ নির্বাচনে কাউকে প্রার্থী হতে হলে অন্তত আটজন দলীয় আইনপ্রণেতার সমর্থন দরকার হয়। এরপর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়।

দুইয়ের অধিক প্রার্থী থাকলে যতক্ষণ পর্যন্ত শুধু দুজন প্রার্থীই অবশিষ্ট না থাকেন ততক্ষণ ভোটাভুটির মাধ্যমে অন্যদের বাতিল করতে থাকেন টোরি এমপিরা। ভোটাভুটির প্রথম রাউন্ডে প্রার্থিতা ধরে রাখতে হলে প্রার্থীদের কমপক্ষে ৫ শতাংশ দলীয় এমপির ভোট পেতে হয়। দ্বিতীয় রাউন্ডে পেতে হয় অন্তত ১০ শতাংশ। এরপরের রাউন্ডগুলোয় যে প্রার্থী সবচেয়ে কম ভোট পান তিনি বাদ পড়েন।  এভাবে যখন মাত্র দুজন প্রার্থী অবশিষ্ট থাকেন তখন এমপিসহ টোরি দলের সব সদস্য বিজয়ী নির্বাচনে ভোট দেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর