তেহরানে এক সংবাদ সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগানের অপেক্ষা করছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। কিন্তু এরদোগানের দেখা নেই, দাঁড়িয়ে আছেন পুতিন। তিনি যে ভিতরে ভিতরে অস্থির হয়ে উঠছেন তা তাঁর মুখভঙ্গিতে স্পষ্ট। একে একে পাক্কা ৫০ সেকেন্ড পার হওয়ার পর এলেন এরদোগান। তারপর হাসিমুখে করমর্দন দুই নেতার। তবে কি পুতিনের অতীত আচরণের প্রতিশোধ নিলেন এরদোগান? তুরস্কের টিটোয়েন্টিফোর ওয়েবসাইট এ বিষয় নিয়ে তাদের খবরের হেডলাইন করেছে, ‘এটা কি প্রতিশোধ ছিল’? বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, পুতিন অতীতে এভাবে এরদোগানসহ আরও কয়েকজন বিশ্বনেতাকে অপেক্ষায় রেখেছিলেন।
গতকাল তুরস্কের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে মঙ্গলবারের ওই ঘটনার ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, পুতিন তাঁর চেয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। পেছনে দুই দেশের পতাকা। তিনি দুই হাত পেটের নিচে আড়াআড়ি করে রেখে দাঁড়িয়ে, চিবোনোর মতো করে মুখ নাড়ছেন। ক্যামেরায় এরদোগানকে দেখা যাওয়ার আগেই তাঁর দাঁড়ানোর ভঙ্গি বদলে যায়। পুতিন হাসিমুখে হাত দুই দিকে প্রসারিত করে এরদোগানকে স্বাগত জানান। এরদোগান বলেন, ‘হ্যালো, কেমন আছেন, ভালো?’
এরপর তাঁরা হাত বাড়িয়ে পরস্পরের দিকে এগিয়ে যান, হাসেন এবং করমর্দন করেন। ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসনের পর দ্বিতীয়বারের মতো পুতিন দেশের বাইরে কোথাও সফরে গেছেন। মঙ্গলবার তিনি ইরান সফরে যান। দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির পাশাপাশি ইরানের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসি ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সঙ্গে বৈঠক করেন পুতিন। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন ন্যাটোর কোনো দেশের নেতার সঙ্গে এটাই পুতিনের প্রথম বৈঠক।সিরিয়া নিয়ে রাশিয়া, ইরানের সাহায্য চায় তুরস্ক : তেহরানে তিন দেশের শীর্ষ নেতার বৈঠক হলো। এ তিন নেতার বৈঠকে প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল সিরিয়া। কয়েক বছর ধরে তাঁরা এ আলোচনা চালাচ্ছেন। এ প্রয়াসকে বলা হয় আস্তানা শান্তি প্রক্রিয়া। কয়েক মাস ধরে এরদোগান উত্তর সিরিয়ায় সামরিক অভিযানের কথা বলছেন। ইউফ্রেটাস নদীর তীরে তাল রিফাতের মতো কিছু শহর সশস্ত্র কুর্দি গোষ্ঠী পিপলস প্রটেকশন ইউনিটের (ওয়াইপিজি) নিয়ন্ত্রণে। এরদোগান ওই শহরগুলো থেকে ওয়াইপিজিকে সরাতে চান। এরদোগানের দাবি, ওয়াইপিজি হলো সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। তারা কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) সঙ্গে যুক্ত। ১৯৮৪ সাল থেকে পিকেকে তুরস্কের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তুরস্কের অভিযোগ, পিকেকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওয়াইপিজি সিরিয়ায় তুরস্কের সেনার ওপর হামলা করছে। তাদের দমাতেই রাশিয়া ও ইরানের নেতাদের সাহায্য চেয়েছেন এরদোগান।