রাশিয়ান ব্লাক সি ফ্লিট-এর সদর দফতরে ইউক্রেন ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়া। রবিবার বিস্ফোরক ভর্তি ড্রোন আছড়ে পড়ে ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপোলে। এ ঘটনায় ছয়জন আহত হয়েছেন। রুশ নৌবাহিনীর দাবি, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোন দিয়ে হামলা চালানো হয়নি। তবে নিরাপত্তার বজ্র আঁটুনি গলে কীভাবে হামলা হলো তা এখনো স্পষ্ট নয়। কিয়েভ এ হামলার দায় স্বীকার করেনি। ক্রিমিয়ার সিনেটর ওলগা কভিতিদি এটিকে সন্ত্রাসী হামলা বলে আখ্যা দিয়েছেন। তবে এ ঘটনা ইউক্রেনের স্থলভাগ ছেড়ে যুদ্ধ কৃষ্ণসাগরে ছড়াতে পারে বলে অনুমান সমর বিশেষজ্ঞদের।
হামলার কারণে পূর্ব পরিকল্পিত নৌবাহিনী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব বাতিল করতে হয়েছে। সেভাস্তোপোলের গভর্নর মিখাইল রাজভোজায়েভ বলেছেন, ‘আজ সকালে আমাদের নৌদিবস প করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউক্রেন। প্রাথমিক তথ্য বলছে, এটি একটি ড্রোন ছিল। যে ছয়জন আহত হয়েছেন তারা সবাই প্রধান কার্যালয়ের কর্মী।’
রুশ নৌবহরের রাশিয়ান ফ্লিট-এর সদর দফতর ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপোল। এখান থেকেই গোটা কৃষ্ণসাগর নিয়ন্ত্রণ করে মস্কো। বিমানবাহী রণতরী, ডেস্ট্রয়ার, মিসাইল ক্রুজার, ফ্রিগেট হোক বা সাবমেরিন তাদের মোতায়েন থেকে শুরু করে যাবতীয় নির্দেশ আসে এ সেভাস্তোপোলের দফতর থেকে। রবিবার বিস্ফোরকভর্তি ড্রোনের মাধ্যমে টার্গেট করা হলো সে দফতরকেই। যদিও ড্রোনটি কোথা থেকে নিক্ষেপ করা হয়েছে, তা রাশিয়ার কাছে এখনো অজানা। দক্ষিণ ইউক্রেনের মূল ভূখ থেকে সেভাস্তোপোলের দূরত্ব প্রায় ১৭০ কিলোমিটার। তাছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনের একটা বড় অংশ দখল করেছে বলে দাবি করেছে মস্কো। এ অবস্থায় সেখান থেকেই হওয়া এ ড্রোন হামলায় চিন্তা বাড়ছে ক্রেমলিনের। ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ান বলছে, ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ডের একজন মুখপাত্র নাটালিয়া গুমেনিউক হামলায় ইউক্রেনের জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেননি। তবে তিনি বলেছেন, রাশিয়া-অধিকৃত অঞ্চলগুলোকে মুক্ত করার জন্য ইউক্রেনের অভ্যন্তরে রাশিয়ান সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে অভিযান পরিচালনা করছে এবং ইউক্রেন ক্রিমিয়াকে নিজেদের অংশ হিসেবে বিবেচনা করেছে। ‘অধিকৃত অঞ্চলগুলোকে মুক্ত করার জন্য ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং তাতে কাজে লাগবে এমন অস্ত্র ব্যবহার করছে। আমাদের লক্ষ্য রাশিয়ান ফেডারেশনের সামরিক ব্যবস্থাপনা। আমরা রাশিয়ান ফেডারেশনের ভূখে আঘাত করি না। ক্রিমিয়া ইউক্রেনের অংশ’, বলেন তিনি।গত এপ্রিলে ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হানায় ডুবে যায় রুশ যুদ্ধ জাহাজ ‘মস্কোভা’। তারপর থেকে কৃষ্ণসাগর এলাকায় আরও সক্রিয়তা বাড়িয়েছে ক্রেমলিন। একের পর এক যুদ্ধ জাহাজ নামিয়ে ব্ল্যাক সি-কে রীতিমতো ঘিরে রেখেছে রাশিয়া। যার জেরে ওই পথে প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল। সেভাস্তোপোলে ড্রোন হামলার পর রুশ যুদ্ধ জাহাজগুলো কী ভূমিকা নেবে তা নিয়েই চিন্তিত বিশেষজ্ঞরা।