বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
জলবায়ু পরিবর্তন

এশিয়ায় ভয়ংকর পানিশূন্যতার আভাস

এশিয়ার পানির আঁধার নামে পরিচিত তিব্বত মালভূমি প্রায় ২০০ কোটি মানুষের পানি সরবরাহ করে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ২০৫০ সালের মধ্যে এই পুরো অঞ্চলের জলের আঁধারে বিপর্যয় ঘটতে পারে। একটি গবেষণায় আশঙ্কা করা হয়েছে, এই শতাব্দীর মাঝামাঝি তিব্বত মালভূমি তার সঞ্চিত পানির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হারাবে। এখন পর্যন্ত এই ইস্যুতে এটিই সবচেয়ে

বিস্তৃত গবেষণা। গবেষণাটি নেচার ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালে প্রকাশ হয়েছে। মধ্য এশিয়া এবং আফগানিস্তানে পানি সরবরাহ করা আমু দরিয়া অববাহিকার পানি সরবরাহের ক্ষমতা ১১৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। উত্তর ভারত এবং পাকিস্তানে সিন্ধু অববাহিকার পানি সরবরাহ ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে ৭৯ শতাংশ। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশই এই দুই অববাহিকার ওপর নির্ভরশীল। পেন স্টেট, সিংহুয়া ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস এর এক দল বিজ্ঞানী দেখতে পেয়েছেন যে সাম্প্রতিক দশকগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভূমধ্যস্থ পানি সঞ্চয়স্থানের মারাত্মক সংকোচন ঘটেছে। এর মধ্যে ভূপৃষ্ঠ এবং ভূগর্ভস্থ, দুই পানির তথ্যই রয়েছে।

তিব্বত মালভূমির কোনো কোনো স্থানে এই পানি হারানোর পরিমাণ ১৫ দশমিক ১৮ গিগাটন পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।

এই ধারা অব্যাহত থাকলে এবং কার্বন নিঃসরণ মাঝারি হারে (২-৪.৫ এসএসপি) চলতে থাকলে, এই শতাব্দীর মধ্যভাগে তিব্বত মালভূমির সঞ্চিত পানি থেকে ২৩০ গিগাটন পানি হারিয়ে যেতে পারে।

পেন স্টেট ইউনিভার্সিটির অ্যাটমিক সায়েন্সের অধ্যাপক মাইকেল মান মনে করেন, পূর্বাভাস সুবিধার নয়। তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘সব কিছু আগের মতোই চলতে থাকলে, অর্থাৎ সামনের দশকগুলোতেও জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে ব্যর্থ হলে তিব্বত মালভূমির নিচের দিকে প্রবাহে প্রায় শতভাগ ধস নামবে। মাঝারি জলবায়ু নীতি গ্রহণ করলেও ক্ষতির পরিমাণ কতটা ব্যাপক হবে, তা দেখে আমি বিস্মিত হয়েছি।

এই গবেষণার জন্য আমু দরিয়া অববাহিকা, সিন্ধু, গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র, সালউইন-মেকং, ইয়াংজি এবং ইয়েলো নদীকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এই অববাহিকা এবং নদীগুলোর আশেপাশে বিপুল জনগোষ্ঠীর বাস এবং পানির চাহিদাও অনেক বেশি। গবেষণায় দেখা গেছে, গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র, সালউইন-মেকং, ইয়াংজি অববাহিকার পানির অভাবকে অন্য নানা উপায়ে মোকাবিলা করা যেতে পারে। কিন্তু আমু দরিয়া এবং সিন্ধু অববাহিকায় উজানে সঞ্চিত পানির অভাব ভাটিতেও মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।

সর্বশেষ খবর