সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ে ১৫০০ সেনা নিহত

মিয়ানমার পরিস্থিতি

মিয়ানমারের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কায়াহ রাজ্যে ২০২১ সালের মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার সেনা সদস্য নিহত হয়েছে। একই সময়ে জান্তা সরকারের বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে দেড় শতাধিক সশস্ত্র প্রতিরোধ যোদ্ধা। থাইল্যান্ডভিত্তিক মিয়ানমারের স্থানীয় দৈনিক দ্য ইরাবতির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

গত বছর দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের জেরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়। গত মে মাস থেকে এ অঞ্চলে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই গোলাগুলি, বিমান ও কামান হামলার খবর পাওয়া গেছে। অঞ্চলটিতে ন্যাশনালিটিজ ডিফেন্স ফোর্স (কেএনডিএফ), কারেন আর্মিসহ (কেএ) আরও কয়েকটি সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠী সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। দ্য কারেনি ন্যাশনালিটিজ ডিফেন্স ফোর্স (কেএনডিএফ), দ্য কারেনি আর্মিসহ (কেএ) বেশ কয়েকটি পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) কায়াহজুড়ে জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করছে। একই ধরনের প্রতিরোধ লড়াই চলছে প্রতিবেশী দক্ষিণাঞ্চলীয় শান রাজ্যে। প্রগ্রেসিভ কারেনি পিপল ফোর্স (পিকেপিএফ) নামের একটি গোষ্ঠী মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত করে। পিকেপিএফ গত বৃহস্পতিবার জানায়, গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত কায়াহ রাজ্যে ১ হাজার ৪৯৯ জান্তা সেনা নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে প্রতিরোধযোদ্ধা নিহত হয়েছেন ১৫১ জন। এ সময়ে এলাকাটিতে ৪৫৪টি লড়াই হয়। একই সময়ে রাজ্যটিতে জান্তা বাহিনী বেসামরিক লক্ষ্যবস্তু ও প্রতিরোধ বাহিনীর ওপর প্রায় ১৫৮টি বিমান হামলা চালিয়েছে। পিকেপিএফ আরও বলেছে, গত ১৫ মাসে কায়াহ রাজ্যে ২৬১ বেসামরিক ব্যক্তি ও অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত ৬১ ব্যক্তি জান্তার হাতে নিহত হয়েছেন। জান্তা কর্তৃপক্ষ এ সময়ে ২৬১ জনকে গ্রেফতার করেছে। পিকেপিএফের ভাষ্যমতে, জান্তার বিমান-কামান হামলার পাশাপাশি অগ্নিসংযোগের কারণে রাজ্যের ১ হাজার ১৮০টি বাড়ি ও ২৫টি ধর্মীয় ভবন ধ্বংস হয়েছে।

ইরাবতীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত কায়াহ থেকে অন্তত ২ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। রাজ্যের প্রবেশমুখগুলো বন্ধ করে দেওয়ায় খাদ্য সংকটে রয়েছে সেখানকার মানুষ। গেল বছর ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চি-র নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতায় আসে দেশটির সামরিক বাহিনী। সামরিক সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটাতে দেশজুড়ে আন্দোলন গড়ে তুলেছে দেশটির নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। ক্ষমতা গ্রহণের পর সামরিক বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে দুই হাজারেরও বেশি মানুষ। এদিকে সেন্ট্রাল রিজিয়ন স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ কায়াহ রাজ্যে জান্তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ লড়াইয়ে যোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছে। তারা গত শুক্রবার জানায়, ১৬ থেকে ৩১ আগস্টের মধ্যে কায়াহ রাজ্যে কেএনডিএফ, কেএ, পিডিএফসহ সম্মিলিত প্রতিরোধ বাহিনীর ১৪টি অতর্কিত হামলায় ৬১ জান্তা সেনা নিহত হয়েছেন।

সর্বশেষ খবর