বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
জাতিসংঘের প্রতিবেদন

জাপোরিঝঝিয়া থেকে তেজস্ক্রিয় ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা

নিরাপত্তা সুরক্ষা অঞ্চল তৈরির আহ্বান

ইউক্রেনের জাপোরিঝঝিয়ায় অবস্থিত ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ক্রমাগত গোলাবর্ষণের ফলে অঞ্চলটিতে বিপুল পরিমাণে তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি বলছে, সেখানে রাশিয়ার সামরিক সরঞ্জামের উপস্থিতি কেন্দ্রটির নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।

ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের শুরুর দিকেই জাপোরিঝঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দখল নেয় রাশিয়া। গত সপ্তাহে কেন্দ্রটি পরিদর্শন করে জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইএইএ। ওই পরিদর্শনের পর সংস্থাটির প্রকাশিত প্রতিবেদনে অঞ্চলটিতে গোলাবর্ষণ থামানো এবং সেখানে একটি নিরাপত্তা ও সুরক্ষা অঞ্চল তৈরির আহ্বান জানানো হয়েছে। তারা বলছে জাপোরিঝঝিয়ায় অবিলম্বে গোলাবর্ষণ বন্ধ করতে হবে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই প্রতিবেদনকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সামরিক সরঞ্জামের উপস্থিতি সেখানে আমাদের কর্মীদের জন্য একটি চাপ এবং এর ফলে স্পষ্ট যে কেন্দ্রটি রাশিয়ার দখলে রয়েছে।’ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ডিনিপার নদীর দক্ষিণ তীরে, ইউক্রেন নিয়ন্ত্রিত শহর এবং সামরিক অবস্থানের কাছে অবস্থিত। উভয়পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে কেন্দ্রটিকে লক্ষ্যবস্তু করার জন্য অভিযুক্ত করেছে। মার্চের শুরুতে রুশ বাহিনী সেটি দখল করে নেয়। মঙ্গলবার রাশিয়া কিয়েভের বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টায় তিনবার ওই এলাকায় আঘাত হানার অভিযোগ এনেছে। ইউক্রেন বলেছে, আশপাশের শহরগুলোতে   গুলি চালানোর জন্য রাশিয়ার বাহিনী কেন্দ্রটিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। যদিও রাশিয়া জোর দিয়ে বলে যে তারা কেন্দ্রটি পাহারা দিচ্ছে। যদিও জাতিসংঘের    আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা উভয় পক্ষকে দোষারোপ করার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করেছে।      জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক দলটি গত সপ্তাহে যখন কেন্দ্রটি পরিদর্শন করে তখন সেখানে গোলাগুলি অব্যাহত ছিল এবং সে সময় এর প্রধান রাফায়েল গ্রসি পরমাণু বিপর্যয়ের ঝুঁকির ব্যাপারে সতর্ক করেছিলেন। যদিও দলটির অধিকাংশ সদস্যই দুই দিন পর কেন্দ্রটি ছেড়ে চলে গেছেন। তবে এর দুজন কর্মকর্তা সেখানে স্থায়ীভাবে থাকবেন। মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে রাশিয়ার সামরিক নিয়ন্ত্রণে সেখানে কর্মরত ৯০৭ জন ইউক্রেনীয় কর্মীর জন্য ‘অত্যন্ত চাপের পরিস্থিতির’ কথা তুলে ধরা হয়েছে। পারমাণবিক স্থাপনা থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের আহ্বান প্রত্যাখ্যান রাশিয়ার।

জাতিসংঘের পারমাণবিক সংস্থা কেন্দ্রটির ক্ষতির বিশদ বিবরণ দিয়েছে এবং বলেছে যে অব্যাহত গোলাবর্ষণ এখনই একটি পারমাণবিক জরুরি অবস্থার পরিস্থিতি তৈরি না করলেও এটির নিরাপত্তার জন্য স্পষ্ট ঝুঁকি তৈরি করছে। যার ফলে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ার ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে।

এদিকে জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেছেন, পর্যবেক্ষক সংস্থাটির উচিত ছিল দখলকৃত পারমাণবিক কেন্দ্রে গোলাবর্ষণের জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করা।

 

 

সর্বশেষ খবর