বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

চার সেকেন্ডে অনাহারে একজনের মৃত্যু

চার সেকেন্ডে অনাহারে একজনের মৃত্যু

প্রতিকি ছবি

বিশ্বে প্রতি চার সেকেন্ডে অনাহারে একজনের মৃত্যু হচ্ছে। এ তথ্য জানিয়েছে ৭৫ দেশের মানব উন্নয়নকাজে জড়িত ২৩৮টি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও)। এ তালিকায় অক্সফাম, সেভ দ্য চিলড্রেন, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের মতো বিশ্বখ্যাত সংস্থাও রয়েছে। গতকাল তারা এই সতর্কতা জানিয়ে বৈশ্বিক ক্ষুধা সংকটের অবসানে নিষ্পত্তিমূলক আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাগুলোর পক্ষে গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন সামনে রেখে বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে একটি খোলাচিঠিও প্রকাশ করেছে।

বিবৃতিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, বিশ্বের প্রায় ৩৪ কোটি ৫০ লাখ মানুষ এখন তীব্র অনাহারে ভুগছে। ২০১৯ সালের তুলনায় এই সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। উন্নয়ন সংস্থাগুলো উল্লেখ করেছে, বিশ্বনেতারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন একবিংশ শতাব্দীতে দুর্ভিক্ষ হতে তারা দেবেন না। কিন্তু আবারও সোমালিয়াতে দুর্ভিক্ষ আসন্ন। বিশ্বের ৪৫টি দেশে ৫ কোটি মানুষ অনাহারের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, একদিকে করোনা মহামারির জের, অন্যদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্ব অর্থনীতি চাপের মুখে পড়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে বৈশ্বিক মন্দার। বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলও বাধাগ্রস্ত হয়েছে। সরবরাহ কমে আসায় দাম বেড়েছে খাদ্যপণ্যের। এই পরিস্থিতিতে দেশে দেশে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য আগের তুলনায় বেড়েছে। বাড়ছে মৃত্যুও।

প্রতিদিন অনাহারে ১৯ হাজার ৭০০ মানুষের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে উন্নয়ন সংস্থাগুলো বলছে, এর অর্থ হলো প্রতি চার সেকেন্ডে অনাহারে একজনের মৃত্যু হচ্ছে। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা ইয়েমেন ফ্যামিলি কেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের মহান্না আহমেদ আলি এলজাবালি বলেন, কৃষি ও ফসল উৎপাদনে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের পরও একবিংশ শতাব্দীতে আমরা এখনো দুর্ভিক্ষ নিয়ে কথা বলছি। এটি কোনো একটি দেশ বা মহাদেশের বিষয় নয়, অনাহারের কখনও নির্দিষ্ট একটি কারণ ছিল না। এটি পুরো মানবতার অবিচারের বিষয়। এর আগে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির প্রধান ডেভিড বিসলে সতর্ক করে বলেছেন, বিশ্বের প্রায় ৩৪ কোটি মানুষ অনাহারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের ৮২টি দেশের ৩৪ কোটি ৫০ লাখ মানুষ চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মুখে রয়েছে।

খোলাচিঠিতে ক্ষুধায় প্রাণ হারানো মানুষের এই সংখ্যার কথা জানিয়ে সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলেছে, বৈশ্বিক ক্ষুধা পরিস্থিতি দ্রুত লাগামহীন হচ্ছে। এর লাগাম টানা জরুরি।

উন্নয়ন সংস্থাগুলো বলেছে, একুশ শতকে এসে বিশ্বজুড়ে বড় ধরনের দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। এটা পুরো মানবতার জন্যই অন্যায়।

 

সর্বশেষ খবর