শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

পুতিনের ঘোষণায় হুলুস্থুল রাশিয়ায়, গ্রেফতার ১৩০০

পুতিনের ঘোষণায় হুলুস্থুল রাশিয়ায়, গ্রেফতার ১৩০০

মস্কোয় গতকাল বিক্ষোভের সময় এক নারীকে আটক করে পুলিশ

হুলুস্থুল অবস্থা রাশিয়ায়। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধে আরও রুশ সেনা পাঠানো ও পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দেওয়ার পরই রীতিমতো তোলপাড় দেশটিতে। অনেকে দেশ ছেড়ে পালাতে চাইছে। এই ঘোষণার পর এর বিরুদ্ধে রাশিয়াজুড়ে বিক্ষোভ করেছে মানুষ। বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ ব্যাপক ধরপাকড় চালিয়েছে। রাশিয়ার স্বতন্ত্র মানবাধিকার সংস্থা ওভিডি-ইনফোর হিসাব মতে, নিরাপত্তা বাহিনী ১ হাজার ৩০০-র বেশি মানুষকে আটক করেছে বুধবার। এদিন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ রাশিয়ার ৩৮টি নগরী থেকে ১ হাজার ৩০০-র বেশি মানুষ গ্রেফতার হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এর মধ্যে রাজধানী মস্কোতেই গ্রেফতার হয়েছে ৫০২ জন এবং সেন্ট পিটার্সবার্গে ৫২৪ জন। এ ছাড়া, ইরকুতস্ক এবং অন্য সাইবেরিয়ান নগরীগুলো থেকেও কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার পুতিন জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে ভাষণ দেন। এতে তিনি ‘আংশিক সেনা সমাবেশ’ করার ঘোষণা দেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম রাশিয়া এ ধরনের সেনা সমাবেশ করতে যাচ্ছে। এই আংশিক সেনা সমাবেশে ৩ লাখ রিজার্ভ সৈন্যকে ডাকা হবে বলে তিনি জানান। যুদ্ধের ফলাফল নিজেদের পক্ষে আনতে আরও সেনা পাঠাতে চান তিনি। এ লক্ষ্যেই সামরিক বাহিনীর রিজার্ভ সেনাদের একটি অংশকে ডাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এরপরই অনেক রুশ নাগরিক দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। পুতিনের ঘোষণার পরপরই রাশিয়া থেকে বাইরের দেশে যাওয়ার ফ্লাইটগুলোর টিকিট দ্রুত বিক্রি হয়ে যায়। এ ছাড়া মানুষের মধ্যে আরেকটি ভয় পুতিন আগেই বলেছিলেন, যে কোনো সময় মার্শাল ল প্রয়োগ করা হতে পারে, সেই সময় রাশিয়া থেকে কেউ দেশ ছাড়তে পারবেন না, তাই আগে ভাগেই শুরু হয়েছে পালানোর প্রক্রিয়া। গতকাল ভাষণে ইউক্রেন ও এর পশ্চিমা মিত্রদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে পুতিন বলেন, রাশিয়ার ভূখ  রক্ষায় সামর্থ্যে থাকা সব উপায় প্রয়োগ করব। প্রয়োজনে পারমাণবিক অস্ত্রও ব্যবহার করা হবে। পশ্চিমারা যদি ‘পারমাণবিক ব্ল্যাকমেল’ অব্যাহত রাখে, তাহলে মস্কো তার হাতে থাকা অস্ত্রের বিশাল মজুদের শক্তি দিয়েই জবাব দেবে। ভাষণে পুতিন বলেছেন, তিনি রিজার্ভ বাহিনীর আংশিক সমাবেশ করার নির্দেশ দিয়ে একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন, আর তা বুধবার থেকেই কার্যকর হয়। এদিকে নতুন করে সেনা মোতায়েনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করেছে সরকারি কৌঁসুলির কার্যালয়।  সব ধরনের বিক্ষোভকে অননুমোদিত আখ্যা দিয়ে বলা হয়, ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিক্ষোভে অংশ নিতে আহ্বান করা হলে এবং বিক্ষোভে অংশ নিলে সর্বোচ্চ ১৫ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।

সর্বশেষ খবর