শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

রাশিয়ার সঙ্গে ‘যুক্ত’ হতে গণভোট শুরু

রাশিয়ার সঙ্গে ‘যুক্ত’ হতে গণভোট শুরু

ইউক্রেনের অধিকৃত অঞ্চলে গণভোট শুরু করল রাশিয়া। গতকাল থেকে রুশ সেনার দখলে থাকা ইউক্রেনের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের (একত্রে দোনবাস) পাশাপাশি খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া শহরে শুরু হয়েছে ভোটদান।

আগামী পাঁচ দিন এই ভোট চলবে। এতে স্থানীয়রা ভোট দিয়ে জানাবেন, তারা রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে চান কি চান না। এই ভোটকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্ব। ধারণা করা হচ্ছে, এই ভোটের পরই ইউক্রেনের এই অংশগুলোকে নিজের সঙ্গে যুক্ত করে নেবে রাশিয়া।

গত আগস্টে দোনবাস, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন অঞ্চলে মস্কোর সর্মথনপুষ্ট প্রশাসন গণভোটের পথ প্রশস্ত করে একটি ডিক্রি জারি করেছিল। ফেব্রুয়ারি মাসে যুদ্ধের গোড়াতেই ওই চারটি এলাকার দখল নিয়েছিল রুশ সেনাবাহিনী।

বিশ্লেষকদের মতে, দোনবাস অঞ্চলসহ ইউক্রেনের একটি বড় অংশ আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করতে চলেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আকারের দিক থেকে তা প্রায় পর্তুগালের সমান। এদিকে, গণভোট নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছিলেন, অধিকৃত অঞ্চলে যদি গণভোট হয়, তা হলে আলোচনার সব পথ বন্ধ হয়ে যাবে।

সাত মাস ধরে চলা যুদ্ধের প্রথম অংশে ইউক্রেনে বেশ ভালো সফলতা পেয়েছে রাশিয়া। তবে সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে বেশ কিছু এলাকা পুনরায় দখলে নিতে সক্ষম হয় ইউক্রেন।

গত এক সপ্তাহ ধরে যদিও দুই পক্ষের অগ্রগতিই থমকে আছে। তবে ইউক্রেনের হাতে জায়গা হারানো নিয়ে ব্যাপক চাপে রয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। অনেক রাশিয়ানই আশঙ্কা করছেন, ইউক্রেন হয়তো গুরুত্বপূর্ণ লুহানস্ক অঞ্চলও দখল করতে শুরু করবে। তাই পরিস্থিতি নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই গণভোট আয়োজন করছে রুশপন্থিরা। এতে করে রাশিয়া আরও শক্তি নিয়ে ইউক্রেনের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে পারবে এবং প্রয়োজনে নতুন নতুন অঞ্চল দখলে নিতে পারবে।

ইউক্রেনের রুশপন্থি অঞ্চলগুলো থেকে নির্বাচনের ঘোষণা আসার সঙ্গে সঙ্গেই রিজার্ভ সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ ছাড়া ইউক্রেনে আরও সেনা পাঠানো হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

‘দ্য নিউইয়র্ক টাইমস’ সূত্রে খবর, গতকাল থেকে অধিকৃত অঞ্চলে ভোটদাতাদের মধ্যে ব্যালট বিতরণ শুরু হয়েছে। সেখানে একটিই প্রশ্ন, ‘আপনারা কি ইউক্রেন থেকে আলাদা হয়ে এমন স্বাধীন রাষ্ট্র তৈরি করতে চাইছেন যা রাশিয়ান ফেডারেশনে যোগ দেবে?’ বিশ্লেষকদের মতে, দোনবাস অঞ্চলে মূলত রুশভাষী জনতার সংখ্যাই বেশি। ফলে বেশ কয়েকবছর থেকেই সেখানে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার একটি লড়াই চলছিল। এবার সেই সুযোগই কাজে লাগিয়েছেন পুতিন। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের থেকে কৃষ্ণসাগর লাগোয়া ক্রিমিয়া উপদ্বীপ ছিনিয়ে নেওয়ার পর ওই অঞ্চলকেও ‘স্বশাসিত’ ঘোষণা করেছিলেন পুতিন।

 

সর্বশেষ খবর