বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বেলারুশ নিয়ে এবার উদ্বিগ্ন ইউক্রেন

ইউক্রেনে গত ফেব্রুয়ারিতে রুশ অভিযান শুরুর ১০ মাসের মাথায় বেলারুশ সফরে গেছেন পুতিন। তবে পুতিনের এই সফর নতুন করে দুশ্চিন্তায় ফেলেছে ইউক্রেনকে। ফলে বেলারুশ থেকে রাশিয়া নতুন করে স্থলাভিযান শুরু করতে পারে এই আশঙ্কায় সীমান্তে প্রতিরক্ষা জোরদার করছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ইয়েভেন ইয়েনিন বিবিসিকে বলেছেন, বেলারুশ সীমান্তে সেনা এবং অস্ত্র মোতায়েন জোরদার করা হচ্ছে। বেলারুশের নেতা আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোরের সঙ্গে বৈঠকের জন্য সোমবার রুশ প্রেসিডেন্ট  পুতিনের মিনস্ক সফরের পরপরই ইউক্রেনের পক্ষ থেকে সীমান্তে প্রতিরক্ষা জোরদার করার কথা জানানো হয়। বেলারুশের সঙ্গে রাশিয়া এবং ইউক্রেনে উভয় দেশেরই সীমান্ত রয়েছে। জানা গেছে, পুতিনও ইউক্রেন সীমান্তে এবং সীমান্তবর্তী রুশ এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেছেন, রুশ সীমান্ত লঙ্ঘনের কোনো চেষ্টা দ্রুত বানচাল করতে হবে। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিশ্বাসঘাতক এবং নাশকতাকারীদের’ খুঁজে বের করতে হবে। পাশাপাশি রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বেলারুশে মোতায়েন রুশ সৈন্যরা বেলারুশ সৈন্যদের সঙ্গে একটি যৌথ মহড়া করবে। এই সিদ্ধান্ত এবং পুতিনের বেলারুশ সফরের প্রতিক্রিয়ায় ইয়েনিন বলেন, ‘রাশিয়া এবং বেলারুশের সঙ্গে সীমান্ত জুড়ে আমরা প্রতিরক্ষা ব্যুহ গড়ে তুলছি।’ বেলারুশ যদিও সরাসরি যুদ্ধে যোগ দেয়নি তবে ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের জন্য তারা রুশ সৈন্যদের নিজেদের ভূমি ব্যবহার করতে দেয়। যুদ্ধের ঠিক আগে বেলারুশে দুই দেশের সৈন্যরা একটি যৌথ মহড়াও চালিয়েছিল। হালে নতুন করে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে যে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার প্রতি সমর্থন আরও বাড়াতে বেলারুশের ওপর চাপ দিচ্ছে মস্কো। সাড়ে তিন বছর পর প্রথমবারের মতো পুতিনের বেলারুশ সফরে যাওয়ায় এই ধারণা জোরদার হয়েছে। তবে এ ধরনের খবরের সত্যতা নাকচ করে দিয়েছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ।

 তিনি বলেন, এই খবর ‘ভিত্তিহীন এবং মনগড়া।’

মস্কোতে বিবিসির সংবাদদাতা স্টিভেন রোজেনবার্গ বলছেন, মিনস্কে  ঘণ্টা তিনেক ধরে বৈঠকের পর দুই নেতা যে সংবাদ সম্মেলন করেন তাতে একবারও ইউক্রেনের নাম উচ্চারিত হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে দুই নেতা বাণিজ্য, অর্থনীতি এবং নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়ে কথা হয়। পুতিন ইঙ্গিত দেন, বেলারুশের কিছু যুদ্ধ বিমানকে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম করা হচ্ছে এবং এ ব্যাপারে রুশ বিশেষজ্ঞরা বেলারুশের বিমান ক্রুদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।

তার দেশকে অত্যাধুনিক এস-ফোর হান্ড্রেড বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ইস্কান্দার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের জন্য লুকাশেঙ্কো পুতিনকে ধন্যবাদ দেন। তবে স্টিভেন রোজেনবার্গ বলছেন, বেলারুশে পুতিনের এই সফর যুদ্ধের একটি কৌশলও হতে পারে। কারণ রাশিয়া হয়তো মনে করছে এই সফরের পর বেলারুশ থেকে নতুন করে আরেকটি স্থলাভিযানের আশঙ্কায় ইউক্রেন হয়তো উত্তরের রণাঙ্গন থেকে তাদের অনেক সৈন্য বেলারুশ সীমান্তে নিয়ে আসবে। এই চাপ যে তৈরি হয়েছে তার ইঙ্গিত ইউক্রেন সরকারের বক্তব্য বিবৃতিতেও পাওয়া যাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর