মঙ্গলবার, ৬ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিশ্ববাজারে দাম বাড়ল তেলের

সৌদির তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা

সৌদি আরবের জ্বালানি তেলের উৎপাদন কমানোর ঘোষণায় বিশ্ববাজারে বেড়েছে তেলের দাম। আগামী জুলাই থেকে দেশটি দৈনিক আরও ১০ লাখ ব্যারেল তেল কম উৎপাদন করবে। এ ঘোষণার পর গতকাল সকালের দিকে দেখা গেছে, ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ১ দশমিক ৫১ ডলার বা ২ শতাংশ বেড়ে ৭৭ দশমিক ৬৪ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এ তথ্য জানায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

ওপেক প্লাস অর্থাৎ বিশ্বের খনিজ তেল রপ্তানিকারক দেশগুলো এবং তাদের মিত্রদের সংগঠন বলছে, ২০২৪ সাল থেকে দিনে তেল উত্তোলন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১৫ লাখ ব্যারেলের মতো কমানো হবে। বিশ্বের অপরিশোধিত তেলের প্রায় ৪০ শতাংশ ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলো উৎপাদন করে। এ কারণে তাদের সিদ্ধান্ত তেলের দামের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে। জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে রবিবার রাশিয়ার নেতৃত্বে তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো সাত ঘণ্টাব্যাপী এক বৈঠক করে। রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক জানান, ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ওপেক প্লাস মোট উৎপাদন কমিয়েছে। এর ফলে তেলের দৈনিক উৎপাদন ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেলে পৌঁছায়। ওপেক প্লাস ইতোমধ্যে দৈনিক ২ মিলিয়ন ব্যারেল তেলের উৎপাদন কমানোর ব্যাপারে সম্মত হয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী তেলের মোট চাহিদার প্রায় ২ শতাংশ। তিনি জানান, ‘আলোচনার ফলে ২০২৪ সালের শেষ পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো গেছে।’

ওপেক প্লাসের নেতৃত্বে রাশিয়া। ভিয়েনায় সংস্থাটি সদর দফতরে সাত ঘণ্টা আলোচনার পর উৎপাদন কমানোর নীতির বিষয়ে দেশগুলো ওই চুক্তিতে পৌঁছেছে। অর্থাৎ ২০২৪ সাল থেকে দিনে আরও ১৪ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমাবে তারা।

সৌদি আরবের জ্বালানিমন্ত্রী আবদুল আজিজ বিন সালমান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘এটি আমাদের জন্য একটি মহান দিন, কারণ চুক্তির মান অভূতপূর্ব। তেলের নতুন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অনেক বেশি স্বচ্ছ এবং অনেক বেশি ন্যায্য।’

এর আগে এপ্রিলে ওপেক প্লাস আকস্মিকভাবে দৈনিক ১৬ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমানোর বিষয়ে সম্মত হয়, যা কার্যকর হয় মে-তে। এ পদক্ষেপের কারণে অল্প সময়ের জন্য দাম বাড়লেও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান হয়নি। রবিবার সৌদি জ্বালানিমন্ত্রী আবদুল আজিজ বিন সালমান বলেছেন, প্রয়োজনে জুলাইয়ের পরও ১০ লাখ ব্যারেল কম তেল উত্তোলনের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। তিনি একে ‘একটি সৌদি ললিপপ’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এর ফলে বাজারে স্থিতিশীলতা আসবে। রিয়াদের দৃষ্টিকোণ থেকে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলারের ওপরে থাকা জরুরি।

সৌদি কর্মকর্তারা তেলের দাম বাড়াতে চান যাতে ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে উচ্চাভিলাষী প্রকল্পগুলোয় বিলিয়ন ডলার ব্যয় অব্যাহত রাখা যায়। মুহাম্মদ বিন সালমান দীর্ঘদিন ধরে দেশটির অর্থনীতিকে তেলনির্ভরতার বাইরে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

সর্বশেষ খবর