ইসরায়েল-অধিকৃত গোলান মালভূমিতে ফুটবল খেলার মাঠে রকেট হামলায় শিশুসহ ১২ জন নিহতের জেরে লেবাননে হিজবুল্লাহ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গতকাল বলেছে, ‘রাতে আইএএফ (ইসরায়েলি বিমান বাহিনী) লেবাননের একেবারে ভিতরে ও দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর বিভিন্ন অবস্থান লক্ষ্য করে ধারাবাহিক হামলা চালিয়েছে। হামলার লক্ষ্যস্থলগুলোর মধ্যে ছিল অস্ত্রভান্ডার ও বিভিন্ন স্থাপনা। চাবরিহা, বুর্জ এল চমালি, বেকা, কেফারকেলা, রাব এল থালাথাইন, খিয়াম ও তেয়ার হারফা এলাকায় এসব হামলা চালানো হয়।’
উল্লেখ্য, গোলান মালভূমির ফুটবল মাঠে রকেট হামলার পর ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, লেবানন থেকে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ এ রকেট ছুড়েছে। তবে হিজবুল্লাহ এ হামলার দায় অস্বীকার করেছে। ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে ক্রমেই ঘনীভূত হতে থাকা এই উত্তেজনা দুই পক্ষের মধ্যে পূর্ণ মাত্রায় যুদ্ধ বাধিয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দুই পক্ষ কিছুদিন পরপর একে অপরের ওপর হামলা চালিয়ে আসছে। গোলান মালভূমির ওই ফুটবল মাঠে শনিবারের হামলাটি ছিল ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তে এ যাবৎকালের সবচেয়ে মারাত্মক প্রাণহানির ঘটনা।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অবিলম্বে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি বলেছেন যে এই গোষ্ঠীকে এর ‘চরম মূল্য দিতে হবে’। এর কয়েক ঘণ্টা পর, ইসরায়েলি বিমান বাহিনী জানায় যে তারা হিজবুল্লাহর বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুসহ ‘অস্ত্রের ভান্ডার এবং বিভিন্ন অবকাঠামোয় রাতভর হামলা চালিয়েছে।’
জাতিসংঘের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বড় ধরনের সংঘাতের ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে সব পক্ষের উচিত ছিল ‘সর্বোচ্চ ধৈর্য ধারণ করা’ কেননা এই সংঘাত বাধলে পুরো অঞ্চল অকল্পনীয় বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। হিজবুল্লাহর মুখপাত্র মোহাম্মাদ আফিফ হামলার দায় অস্বীকার করেছেন এবং এই গোষ্ঠীটি জাতিসংঘকে বলেছে যে ওই বিস্ফোরণটি একটি ইসরায়েলি ইন্টারসেপ্টর রকেটের কারণে হয়েছে। বিবিসি এই তথ্য যাচাই করার চেষ্টা করছে।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, নিহতদের সবার বয়স ১০ থেকে ২০ বছরের মধ্যে, যদিও ইসরায়েলি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, কেউ কেউ এর চেয়েও কম বয়সী ছিল।