রুশ রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের কিছু সূত্র দাবি করেছে, কুরস্ক আক্রমণ ছিল ভলোদিমির জেলেনস্কির জন্য ভ্লাদিমির পুতিনের তৈরি করা একটি ফাঁদ। এতে শেষ পর্যন্ত ভ্লাদিমির পুতিনই লাভবান হবেন। ইউক্রেনের সাহসী এ অভিযানের উদ্দেশ্য ও পরিণতি নিয়ে বিভিন্ন জল্পনার মধ্যে এ কথা উঠে এসেছে মার্কিন সাময়িকী নিউজউইকের এক প্রতিবেদনে।
ক্রেমলিনপন্থিরা রুশ ভূখন্ডে ইউক্রেনের এত সহজে প্রবেশ করতে পারা নিয়ে ফাঁদের বিষয়টি সামনে আনছেন। রুশ বার্তা সংস্থা আরআইএ নভোস্তির একটি নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, রুশ বাহিনী ইতোমধ্যে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ক্রেমলিনপন্থি আরেকটি মাধ্যম জারগ্রাড একদিন আগে বলেছিল, ইউক্রেনীয় ব্রিগেডগুলো একটি ফাঁদে পড়েছে এবং তারা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তবে রুশ সামরিক বগারদের প্রতিবেদন ইউক্রেনের অগ্রগতির কথা তুলে ধরা হচ্ছে। জেলেনস্কি দাবি করেছেন, তার বাহিনী সুদজা শহরটি দখল করেছে। যদিও ইউক্রেনীয় বাহিনীর ফাঁদে পড়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে কিয়েভের পরবর্তী পদক্ষেপ এবং দীর্ঘমেয়াদে পুতিন এর থেকে কীভাবে সুবিধা পেতে পারেন তা অনিশ্চিত। রাশিয়ার পাল্টা আক্রমণের ঝুঁকি থাকার কারণে ইউক্রেনের সেরা ইউনিটগুলো এখন এমন একটি জায়গায় রয়েছে যা মস্কোর আঘাতের শিকার হতে পারে।
লন্ডনের কিংস বিজনেস স্কুলের অধ্যাপক মাইকেল এ. উইট বলেন, অতি প্রসারণের ঝুঁকি রয়েছে এবং মূল্যবান সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। পুতিন এ সুযোগকে ব্যবহার করে পরিস্থিতি আরও জটিল করতে পারেন।
এছাড়া, রাশিয়ায় পুতিন যে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার করছেন যে দেশটি পশ্চিমা শক্তির হুমকির মুখে রয়েছে এবং ইউক্রেন এ হুমকির একটি অংশ সেই আশঙ্কার প্রতিফলন হিসেবে এ হামলাকে দেখিয়ে দেশে সমর্থন বাড়াতে সক্রিয় হবে ক্রেমলিন। এদিকে, রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে প্রাণহানি এবং রিজার্ভ বাহিনীর অভাব প্রমাণ করছে যে, রাশিয়াকে নতুন করে সেনা সমাবেশ করতে হতে পারে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম বুমবার্গের মতে, রাশিয়া নতুন একটি সেনা সমাবেশের উদ্যোগ নিতে পারে। হয়ত চলতি বছরের শেষের দিকে তা শুরু হতে পারে।
ফিনল্যান্ডভিত্তিক সামরিক বিশেষজ্ঞ এমিল কাস্টেহেলমি বলেছেন, কুরস্কের কয়েকটি সীমান্ত গ্রাম দখলের ফলে ইউক্রেনের সেনা ও সরঞ্জামের ক্ষতি হতে পারে, যা এই যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা দুর্বল হয়ে পড়ছে। লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের বিশ্লেষক ভুক ভুকসানোভিক বলেন, এ পদক্ষেপটি ইউক্রেনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ, অর্থাৎ জনবল নষ্ট করতে পারে।