ইউক্রেনে দীর্ঘ পাল্লার জেএএসএসএম ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির চুক্তি প্রায় হয়ে এসেছে। সম্প্রতি রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। এসব ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার গভীরে আঘাত হানতে সক্ষম। চুক্তির জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অনেকদিন ধরে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই চুক্তির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বুধবার রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বিষয়টিতে ‘রেড লাইন’ আখ্যা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে এই ‘রেড লাইন’ নিয়ে মজা না করার সতর্কবার্তা দেন।
বলেন, ‘কোল্ড ওয়ারের (স্নায়ুযুদ্ধ) পর থেকে মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে নিরাপত্তার ভারসাম্য রক্ষার পারস্পরিক প্রতিরোধের নীতি যুক্তরাষ্ট্র ভুলে যাচ্ছে, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।’
প্রতিবেদনটি সম্পর্কে নিজের মতামত জানাতে গিয়ে রাশিয়ার এক টিভি চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে ল্যাভরভ বলেন, ‘কোনো কিছুতেই আমি আর অবাক হব না। আমেরিকানরা ইতোমধ্যেই তাদের নিজেদের নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করেছে। তাদের উসকানি দেওয়া হচ্ছে। জেলেনস্কি অবশ্যই তা লক্ষ্য করেছেন এবং এর সুযোগ নিচ্ছেন।’ ল্যাভরভ সতর্ক করে বলেন, ‘কিন্তু তাদের বুঝতে হবে, তারা আমাদের ‘রেড লাইন’ নিয়ে মজা করছে। তাদের এভাবে মজা করা উচিত নয়।’
রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ২০২২ সালে ইউক্রেনে তার ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করার পর থেকে বারবার পশ্চিমাদের সতর্ক করেছেন যাতে তারা রাশিয়াকে বাধা না দেয়; কারণ রাশিয়ার কাছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার রয়েছে। তবুও ওয়াশিংটন ও তার মিত্ররা ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়া অব্যাহত রেখেছে, যার মধ্যে ট্যাংক, উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র এবং এফ-১৬ যুদ্ধবিমান রয়েছে।
কিছু পশ্চিমা রাজনীতিবিদ মনে করেন, পুতিন ‘নিছক’ পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিচ্ছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর ইউক্রেনকে পুরোপুরি সমর্থন করা উচিত যাতে তারা যুদ্ধে জয়ী হয়।
ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ৬ আগস্ট ইউক্রেনের রাশিয়ায় আক্রমণ প্রমাণ করে যে পুতিনের ‘রেড লাইন’ আসলে গুরুত্বহীন। ল্যাভরভ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র জানে রাশিয়ার সীমারেখা কোথায়। তবে তারা যদি মনে করে ইউক্রেনে যুদ্ধ বাড়লে কেবল ইউরোপ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তবে সেটা ভুল।
তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ভাবে, কেউ তার ক্ষতি করবে না।’ এটি সোভিয়েত আমল থেকে চলে আসা যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত ভারসাম্যকে দুর্বল করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। ‘এই পারস্পরিক প্রতিরোধের ধারণা ম্লান হয়ে যাচ্ছে এবং এটি বিপজ্জনক’, ল্যাভরভ বলেন।