মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বহু সিদ্ধান্তে ধাক্কা লেগেছে প্রচলিত বিশ্ব ব্যবস্থায়। বিশেষ করে অর্থ কাটছাঁটের নামে ট্রাম্প জাতিসংঘের মতো বৈশ্বিক সংস্থাগুলোকে বড় ধরনের বিপাকে ফেলেছেন। অর্থের অভাবে জাতিসংঘের অনেক কার্যক্রমের লাগাম টানতে হচ্ছে। কিছু কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার পথে।
এবার ট্রাম্পের মার্কিন অর্থ সাশ্রয় নীতির প্রভাব পড়তে যাচ্ছে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে। জানা গেছে, তীব্র তহবিল সংকটের মুখে বিশ্বজুড়ে ১১টি শান্তি মিশনে নিয়োজিত শান্তিরক্ষী বাহিনীর এক-চতুর্থাংশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতিসংঘ।-রয়টার্স
সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এ প্রত্যাহার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। বিশেষত, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ভবিষ্যৎ তহবিল অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় এই কাটছাঁট করতে হচ্ছে।
জাতিসংঘের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সবমিলিয়ে আমাদের মোট শান্তিরক্ষী সেনা ও পুলিশের প্রায় ২৫ শতাংশ সদস্যকে তাদের সরঞ্জামাদিসহ নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে হবে। এর পাশাপাশি মিশনগুলোতে কর্মরত বিপুল সংখ্যক বেসামরিক কর্মীও এই সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ওই কর্মকর্তা আরও জানান, এ কাটছাঁটের ফলে প্রায় ১৩ হাজার থেকে ১৪ হাজার সেনা ও পুলিশ সদস্যকে ফিরিয়ে আনা হবে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা তহবিলের সবচেয়ে বড় জোগানদাতা যুক্তরাষ্ট্র। যারা মোট তহবিলের ২৬ শতাংশের বেশি প্রদান করে থাকে। এরপরই রয়েছে চীন, যারা প্রায় ২৪ শতাংশ অর্থ প্রদান করে। এই অর্থ প্রদান বাধ্যতামূলক। জাতিসংঘের আরেকজন কর্মকর্তা জানান, নতুন আর্থিক বছর পয়লা জুলাই শুরু হওয়ার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বকেয়ার পরিমাণ ছিল ১.৫ বিলিয়ন ডলার। এখন এর সঙ্গে আরও ১.৩ বিলিয়ন ডলার যুক্ত হওয়ায় তাদের মোট বকেয়া বেড়ে ২.৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি হয়েছে।
তবে, প্রথম কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘকে জানিয়েছে যে তারা শিগগিরই ৬৮০ মিলিয়ন ডলারের একটি কিস্তি পরিশোধ করবে। এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য জাতিসংঘে অবস্থিত মার্কিন মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাৎক্ষণিক কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগস্ট মাসে একক সিদ্ধান্তে ২০২৪ এবং ২০২৫ সালের জন্য বরাদ্দকৃত শান্তিরক্ষা তহবিলের প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার বাতিল করেছেন বলে ট্রাম্প প্রশাসন কংগ্রেসকে জানিয়েছে।