ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েল তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় দেড় হাজারেরও বেশি ভবন ধ্বংস করেছে। গাজা উপত্যকার স্যাটেলাইট ছবি পর্যালোচনা করে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি ভেরিফাই এ তথ্য জানিয়েছে। ১০ অক্টোবর আমেরিকার মধ্যস্ততায় হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েলের বর্বরতা অব্যাহত রয়েছে। বিবিসি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সাম্প্রতিক স্যাটেলাইট ছবি তোলা হয়েছে ৮ নভেম্বর। ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে, ইসরায়েলি সেনা নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় পুরো পাড়া এক মাসেরও কম সময়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভবনগুলো বিস্ফোরক দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিবিসি ভেরিফাই কিছু এলাকার স্যাটেলাইট ছবি সংগ্রহ করতে পারেনি, যার অর্থ প্রকৃত ধ্বংসের পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে। কিছু বিশেষজ্ঞ বলছেন, ভবন ধ্বংসের এই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্র, মিসর, কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করছে। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বিবিসি ভেরিফাইকে বলেছেন, তারা ‘যুদ্ধবিরতির কাঠামোর মধ্যে’ কাজ করছেন।
ভয়ংকর যৌন নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন ফিলিস্তিনি নারী বন্দিরা : সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া একজন ফিলিস্তিনি নারী ইসরায়েলি কারাগারে যৌন নির্যাতন ও অত্যাচারের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেছেন। প্যালেস্টাইন সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস এই সাবেক বন্দির জবানবন্দি নথিভুক্ত করেছে। যেখানে ইসরায়েলি সেনা কর্তৃক ধর্ষণ, জোরপূর্বক নগ্ন করা, নগ্ন করে চিত্রগ্রহণ এবং বিভিন্ন বস্তু ও কুকুর ব্যবহার করে যৌন নিপীড়নসহ সংঘটিত ও পদ্ধতিগত যৌন নির্যাতনের চিত্র উঠে এসেছে।
৪২ বছর বয়সি এন এ (ছদ্মনাম) নামক ওই নারী জানান, গত নভেম্বরে উত্তর গাজার একটি ইসরায়েলি তল্লাশি চৌকি পার হওয়ার সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি কমপক্ষে চারবার ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ ছাড়া তাকে বারবার অশ্লীল গালিগালাজ, নগ্ন করে ভিডিও করা, ইলেক্ট্রিক শক দেওয়া এবং মারধর করা হয়েছে। তার জবানবন্দি অনুযায়ী, তাকে কাপড় খুলতে বাধ্য করা হয় এবং একটি ধাতব টেবিলের ওপর হাতকড়া পরিয়ে বাঁধা হয়। তিনি বলেন, একজন পুরুষ আমাকে ধর্ষণ করছিল। আমি চিৎকার শুরু করলে তারা আমাকে চোখ বন্ধ অবস্থায় পিঠ ও মাথায় মারধর করে। ধর্ষণের পর তাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই ঘরে, হাতকড়া লাগানো অবস্থায় এবং পোশাকহীন অবস্থায় ফেলে রাখা হয়। সবচেয়ে অবমাননাকর অপব্যবহারের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি তিন দিন যে ঘরে ছিলাম, তার মধ্যে পুরো একটি দিন আমাকে নগ্ন অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছিল। তৃতীয় দিনেও তাকে পোশাক ছাড়া রাখা হয় এবং সেনারা দরজার ফাঁক দিয়ে তাকে দেখত এবং ভিডিও করত। এক সেনা তাকে সমাজমাধ্যমে ছবিগুলো পোস্ট করার হুমকিও দেয়। পিসিএইচআর জানিয়েছে, এই যৌন সহিংসতা শুধুমাত্র নারী বন্দিদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। -বিবিসি
১৮ বছর বয়সি আরেক পুরুষ বন্দী এমএ (ছন্দনাম) জানান, গাজার একটি মানবিক সাহায্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে তাকে এবং আরও ছয়জন বন্দিকে হাঁটু গেড়ে বসতে বাধ্য করা হয় এবং ইসরায়েলি সেনারা বোতল ঢুকিয়ে তাদের মলদ্বারে যৌন নির্যাতন করে। -বিবিসি ও প্রেস টিভি