রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

দেড় যুগ পর ইরাকে জনশক্তি রপ্তানি

প্রায় দেড় যুগ পর ইরাকে জনশক্তি রপ্তানি পুনরায় শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ জন্য গতকাল ঢাকায় দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। এই স্মারকের আওতায় প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক ইরাকে যাবে। এর মধ্যে চলতি সেপ্টেম্বরেই যাবেন এক হাজার জন। এরা কোন খাতে কাজ করবেন তা নির্ধারণ হবে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর ইরাকের প্রতিনিধি দলের সফরের পর। মালয়েশিয়া যেতে আগ্রহী নিবন্ধিতদের মধ্য থেকেই বাছাই করে কর্মী পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খোন্দকার মোশাররফ হোসেন। প্রবাসী কল্যাণ ভবনে সমঝোতা স্মারকের স্বাক্ষর করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খোন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ইরাকের শ্রমমন্ত্রী নাসের আল রুবাইয়্যাত। পরে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ইরাক সরকার বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৩০ হাজার দক্ষ শ্রমিক নেওয়ার চাহিদাপত্র দিয়েছে। খুব কম খরচে ইরাক যাওয়ার সুযোগ পাবেন বাংলাদেশি কর্মীরা। সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ইরাকই প্রথম জনশক্তি আমদানি করে। তবে ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধের পর কর্মী পাঠানো বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৩ সালে বহুজাতিক বাহিনীর ইরাক অভিযানের পর থেকে দেশটি এখনো অস্থিতিশীল। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, ইরাক দক্ষ, শিক্ষিত ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনশক্তি নিতে চায়। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর ইরাকের একটি প্রতিনিধি দল আসবে, যারা জনশক্তি রপ্তানি ব্যুরোর ডাটাবেইজ, মিরপুর ও কোরিয়ান সেন্টারে কর্মী প্রশিক্ষণ কার্যক্রম দেখবে। কর্মীদের বিভিন্ন বিষয় দেখার পর প্রথম ধাপে এক হাজার কর্মী নেবে ইরাক। মন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়া পাঠানোর জন্য যে সাড়ে ১৪ লাখ শ্রমিক রেজিস্ট্রেশন করেছে, তাদের থেকে বাছাই করে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ইরাকে লোক পাঠানো হবে। তবে মালয়েশিয়ায় সরকারিভাবে কর্মী পাঠানো হলেও ইরাকের ক্ষেত্রে কী হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে ইরাকি মন্ত্রী নাসের আল রুবাইয়েত বলেন, সরকারি-বেসরকারি দুই পর্যায়েই জনশক্তি আমদানি করতে চান তারা। তিনি বলেন, এ সমঝোতার মাধ্যমে দুই বন্ধু দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন জোরদার হবে। একই সঙ্গে দালালের মাধ্যমে অবৈধভাবে ইরাকে যাওয়া বন্ধ হবে। কর্মীদের শতভাগ মানবাধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, 'যদি কোনো কর্মী হয়রানির শিকার হয়, তাহলে ১৯৬২ সালের আইন অনুযায়ী যথাযথ ক্ষতিপূরণ পাবে। এ ছাড়া আমরা বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে ঢাকা-বাগদাদ সরাসরি ফ্লাইটের মাধ্যমে কর্মী পাঠানোর ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেছি। বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বেসামরিক বিমান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাদা চুক্তি হতে যাচ্ছে বলেও জানিয়েছেন ইরাকের শ্রমমন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী কল্যাণ সচিব জাফর আহমেদ খান এবং ইরাকে নিযুক্ত বাংলাদেশের চার্জর্ দ্য অ্যাফেয়ার্স জিয়াউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর