মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা
জাবি শিক্ষকের বাসায় ককটেল কাফনের কাপড়

\\\'তোরে কোপানোর জন্য রামদা রেডি\\\'

\\\'তোরে কোপানোর জন্য রামদা রেডি\\\'

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক অজিতকুমার মজুমদার ও উপাচার্য অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেনকে হত্যার হুমকি দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রবিবার রাতে খুদে বার্তার মাধ্যমে আলাদাভাবে তাদের এ হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এদিকে গতকাল সকাল ১০টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের ভেতর থেকে ককটেলসদৃশ বস্তু ও কাফনের কাপড় উদ্ধার করেছে পুলিশ।

জানা যায়, রবিবার ৬টা ৩৩ মিনিটে ০১৭৮৬৩২১২৫১ নম্বর থেকে উপাচার্যের মুঠোফোনে খুদে বার্তায় ফের হত্যার হুমকি দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে বলা হয়, উপাচার্য ক্যাম্পাসে ফিরলে তাকে হত্যা করা হবে। এদিকে ওই দিন রাত ১০টা ২২ মিনিটে ০১৭৪৪৭৭৩৫৭৯ নম্বর থেকে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অজিতকুমার মজুমদারের মুঠোফোনে খুদে বার্তায় ফের হত্যার হুমকি দেয় দুর্বৃত্তরা। খুদে বার্তায় বলা হয়েছে, 'তোকে সাবধান করার পরেও এখনো আন্দোলন প্রত্যাহার করলি না। এবার মৃত্যুর জন্য শেষ প্রস্তুতি নে। তোরে কোপানোর জন্য রামদা রেডি।' অন্যদিকে সকাল ১০টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের ভেতর থেকে একটি ককটেলসদৃশ বস্তু ও কাফনের কাপড় উদ্ধার করেছে পুলিশ। সকালে বাসার তত্ত্বাবধায়ক ঘাসের মধ্যে ককটেল দেখতে পেয়ে নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে জানান। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বিষয়টি আশুলিয়া থানা পুলিশকে জানালে ১০টার দিকে সাভার সার্কেল এএসপি রাসেল শেখ ও আশুলিয়া থানার ওসি বদরুল আলমের নেতৃত্বে বস্তু উদ্ধার করা হয়। এএসপি রাসেল শেখ বলেন, ককটেলের মতো দেখতে হলেও মূলত এটি একটি পটকা। আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য এটি রাখা হয়েছিল। এদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে পশ্চিম পাশ থেকে সাদা কাফনের কাপড় উদ্ধার করে পুলিশ। এ ব্যাপারে প্রক্টর ড. মুজিবুর রহমান জানান, বাসার দেয়াল ডিঙিয়ে কেউ এগুলো রেখে যেতে পারে। উপাচার্যের বাসভবনের চারপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এদিকে, প্রায় তিন স্তরের নিরাপত্তা চৌকি ডিঙিয়ে কীভাবে ককটেল উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে পাওয়া গেল তা নিয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলছেন, উপাচার্য নিজেই তার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন। আমরা জানতে পেরেছি, সহকারী প্রক্টর সাইফুল ইসলামের মাধ্যমে ছাত্রলীগের একটি অংশকে দিয়ে তিনি ককটেল ও কাফনের কাপড় নাটক সাজিয়েছেন। এদিকে, ছাত্রলীগের একটি বিশ্বস্ত সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যলয়কে অস্থিতিশীল করতে প্রশাসনের একজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ছাত্রলীগের একটি অংশকে দিয়ে বিপুল ককটেল মজুদ করিয়েছে; যাতে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর দায় চাপানো সহজ হয়।

১৩ দিন ধরে অবরুদ্ধ দুই উপ-উপাচার্য : টানা ১৩ দিন ধরে প্রশাসনিক ভবনে অবরুদ্ধ রয়েছেন দুই উপ-উপাচার্য অধ্যাপক এম এ মতিন (ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য) ও অধ্যাপক আফসার আহমদ। উপাচার্যের পদত্যাগ ও উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের দাবিতে তাদের অবরুদ্ধ করে রেখেছে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। একই সঙ্গে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করছে তারা। ক্লাস-পরীক্ষা এ ধর্মঘটের আওতামুক্ত হওয়ায় একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকলেও স্থবির রয়েছে প্রশাসনিক কার্যক্রম।

 

 

সর্বশেষ খবর