বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট, ২০১৪ ০০:০০ টা

অভাব অনটনে শেখ হাসিনার দেহরক্ষী মাহবুবের পরিবার

অভাব অনটনে শেখ হাসিনার দেহরক্ষী মাহবুবের পরিবার

‘তুমরা আমার বাড়িতি বারবার কী কত্যি আসো। আমার মিয়ার একটা মিয়া বিয়া তো দিয়ি দিতি পার না। সে ক্ষমতা তো তুমাদের নেই’- সাংবাদিক পরিচয় শুনে এভাবেই খেঁকিয়ে ওঠেন দারিদ্র্যপীড়িত বৃদ্ধ হারুন অর রশীদ। তিনি ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সভায় গ্রেনেড হামলায় শেখ হাসিনার নিহত দেহরক্ষী মাহবুব রশীদের অসহায় বাবা। বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার ফুলবাড়ী গ্রামে। মাহবুবের এ অকাল মৃত্যু উল্টে-পাল্টে দিয়েছে গোটা পরিবারের জীবনচিত্র। অভাব আর হতাশা আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেছে তাদের। মাহবুবের মৃত্যুর পর অনেকের দেওয়া আশ্বাসবাণী আজ ফাঁকা বুলিতে পরিণত হয়েছে।
জানা গেছে, ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে যখন উপর্যুপরি গ্রেনেড আর গুলির আওয়াজ, তখন শেখ হাসিনাকে নিরাপদে গাড়িতে তুলে দিয়ে ঘাতকের বুলেট বিদ্ধ হয়ে রাজপথে লুটিয়ে পড়েন বিশ্বস্ত সৈনিক মাহবুব। এ আত্মত্যাগ ইতিহাসের পাতায় স্থান না পেলেও তার অনুপস্থিতি আজ কঠিন বাস্তবতার মুখে দাঁড় করিয়েছে মাহবুবের পরিবারকে। ফুলবাড়ী গ্রামে মাহবুবের বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের খোঁজ রাখেন না কেউ। জটিল অসুখে মা হাসিনা বেগম দীর্ঘদিন থেকে শয্যাশায়ী। টাকার অভাবে বোনের বিয়ে হয় না। এখন হতাশা আর ক্ষোভে মানসিক ভারসাম্য হারাতে বসেছেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ পিতা হারুন অর রশীদ। ২১ আগস্টের পর শেখ হাসিনার নির্দেশে ঢাকার দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মাহবুবের দুই ভাই মামুন অর রশীদ ও শাহজাহান আলীর চাকরি হলেও এখন তারা বেকার। দুই বোন আবেদা সুলতানা বিউটি ও শিরিন আফরোজের লেখাপড়া বেশি দূর এগোয়নি অর্থাভাবে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা কথা দিয়েছিলেন দুই বোনের বিয়ে হলে তাদের চাকরি দেওয়া হবে। কিন্তু দিনের পর দিন ঢাকায় বসে থেকে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে ঢুকতে পারেননি পিতা হারুন অর রশীদ।
 প্রতি বছর ২১ আগস্ট গ্রামের বাড়িতে মাহবুব স্মরণে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হলেও এবার তা হচ্ছে না, বললেন মাহবুবের বড় ভাই শাহজাহান আলী। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা কখনো তাদের খোঁজ রাখেন না।

 

সর্বশেষ খবর