মঙ্গলবার, ৩ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা
পোশাক খাতে বিনিয়োগ

বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে প্রণোদনায় আপত্তি ব্যবসায়ীদের

তৈরি পোশাক খাতে বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে প্রণোদনার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন দেশীয় উদ্যোক্তারা। তারা বলেছেন, বিদেশি উদ্যোক্তাদের কারখানায় দেশের শ্রমনীতি অনুসরণ করে বেতন-ভাতা দেওয়া হয় না। কারখানা স্থাপনের প্রথম দিকে তারা বেশি বেতনে শ্রমিক নিয়োগ দিলেও পরে বেতন কমিয়ে দেন। এ ছাড়া ওইসব প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটলে সেই অসন্তোষ নিরসনে বিদেশিরা দায় নিতে চান না। সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের এসব তথ্য তুলে ধরে তাদের বিশেষ সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে এসব আপত্তি জানান বিকেএমইএর প্রতিনিধি।
সূত্র জানায়, দেশের তৈরি পোশাক খাতে বিনিয়োগকারী বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন ধরে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সদস্য হতে চাইছে। এ ছাড়া ওই প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের কাছে ইউডি (ইউটিলাইজেশন ডিক্লারেশন) সুবিধাও চেয়ে আসছে। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ থেকে উৎপাদিত তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য উন্নত দেশগুলোতে রপ্তানির ক্ষেত্রে জিএসপি (বিশেষ শুল্ক সুবিধা) পায়। এই সুবিধা নিতে পণ্যটি যে বাংলাদেশে তৈরি সে জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ইউডি সার্টিফিকেট নিতে হয়। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো উৎপাদিত পণ্য রপ্তানিতে জিএসপি সুবিধা পাওয়ার জন্যই সরকারের কাছে ‘ইউডি’ সুবিধা দাবি করে। সূত্রগুলো আরও জানায়, গত বছর জাপানি প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরের সময় তার দেশের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের পোশাক খাতে বিনিয়োগ সুবিধাসহ অন্যান্য সুবিধা চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। বিনিময়ে জাপানে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে রুলস অব অরিজিনের শর্ত শিথিল করে দুই স্তর থেকে এক স্তরে নামিয়ে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়ে দেওয়া হয় জাপানের পক্ষ থেকে। পরে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শওকত আলী ওয়ারেছী। ওই বৈঠকে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান জানান, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইউডি সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে ইপিবির পক্ষ থেকে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএসহ সংশ্লিষ্ট সুবিধাভোগীদের সঙ্গে আলোচনাও করা হয়েেেছ বলে জানান তিনি। তবে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যানের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিকেএমইএর ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ওই বৈঠকে বলে, অতীতে বেশ কয়েকজন বিদেশি উদ্যোক্তা দেশে পোশাক কারখানা স্থাপন করেন। পরে ওই কারখানাগুলোতে শ্রম অসন্তোষ দেখা দিলে সেটি নিরসনে কার্যকর ভূমিকা রাখেননি বিদেশিরা। ওই প্রতিনিধি আরও বলেন, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শর্তসাপেক্ষে ইউডি সুবিধা দেওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে তাদের অবশ্যই দেশের শ্রমনীতি অনুযায়ী বেতন-ভাতাদি পরিশোধ করতে হবে।

সর্বশেষ খবর