মঙ্গলবার, ৩ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা

হত্যার স্বীকারোক্তি গোপন করে জামিন

রাজধানীর খিলগাঁও থানার একটি হত্যা মামলায় আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গোপন করে জামিন নেওয়া হয়েছে। এমন জামিন আদেশের খবরের বিষয়টি মানতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নিহতের স্বজনরা। তাদের অভিযোগ, রাষ্ট্রপক্ষ মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে মনোযোগী না থাকার কারণে আসামি এমন বিরল জামিন পেয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ জানিয়েছে, সব ধরনের মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে আদালতে শুনানির সময় ঘটনার বিষয়বস্তু সঠিক ভাবে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি গুরুতর অভিযোগের মামলায় আসামির জামিন আবেদনের জোড়ালো বিরোধিতা করা হয়। তবে সাধারণ আইনজীবীরা জানান, আসামি ঘটনার কথা স্বীকার করে আদালতের কাছে জবানবন্দি দিলেও রহস্যজনক কারণে জামিন আদেশে বিচারক উল্লেখ করেছেন, আসামি কোনো স্বীকারোক্তি করে নাই। এর ফলে ন্যায় বিচার ব্যাহত হতে পারে। সম্প্রতি এই আসামি জামিন পাওয়ার পরে বৃহস্পতিবার মামলার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও জামিননামার কপি বাংলাদেশ প্রতিদিনের হাতে আসে। পরে এ খবরটি আদালতপাড়ায় আইনজীবীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শাহ আলম তালুকদার বলেন, তিনি বিষয়টি জানতেন না। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ওঠার পর বৃহস্পতিবার মামলার নথিটি তিনি দেখেছেন। জানা গেছে, খিলগাঁও থানার আলী হোসেন হত্যা মামলায় আসামি সোহাগকে গত বছরের ৭ নভেম্বর গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে চলতি মাসের ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক কে এম ইমরুল কায়েস জামিন দেন। যার ফৌজদারি বিবিধ মামলা (সি আর মিস/জামিন আবেদন) নম্বর-৫০৯/২০১৫। জামিন আদেশে বলা হয়েছে, আসামি কোনো স্বীকারোক্তি করে নাই বা রিমান্ডে কোনো উন্নতি নাই বা আসামির বিরুদ্ধে কোনো তথ্য নাই। কিন্তু মামলার নথি সূত্রে দেখা গেছে, গত বছরের ৮ নভেম্বর এই মামলায় আসামি সোহাগ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে ঢাকা মহানগর হাকিম আমিত কুমার দে-এর আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এর আগে ২০১৪ সালের ৮ নভেম্বর রাজধানীর খিলগাঁও থানার এসআই মো. সৈয়দ আলী আদালতের কাছে আসামি সোহাগের জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন, নিহত আলী হোসেন হত্যায় ব্যবহৃত চাকুটি আসামি সোহাগের নিকট ছিল। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত বছরের ১ নভেম্বর সন্ধ্যায় খিলগাঁও এলাকার নবীনবাগের নাসিম মিয়ার বাড়ির সামনে রাস্তায় আলী হোসেন তার স্ত্রীর মায়ের সঙ্গে কথা বলছিল। হঠাৎ আসামি লিটনসহ ১০-১২ জন মিলে কিল ঘুসি মারে এবং তখন তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় আসামিদের মধ্যে একজন আলী হোসেনের বুকের বাম পাশে চাকু ঢুকিয়ে দেয়। পরে আলী হোসেন মারা গেলে তার স্ত্রী সোনিয়া আক্তার বাদী হয়ে খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। মামলা নম্বর-৪(১১)১৪।

সর্বশেষ খবর