শুক্রবার, ২২ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

ধরা পড়ছে না সন্ত্রাসী ভিপি সোহেল

ধরা পড়ছে না সন্ত্রাসী ভিপি সোহেল

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নজরুল ইসলাম বাবু হত্যা মামলার বাদী তার বাবা জালালউদ্দিনকেও প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি সন্ত্রাসী ভিপি সোহেল এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। পুলিশ তাকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি। এ ঘটনায় নজরুল হত্যা মামলার সাক্ষীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এদিকে ভিপি সোহেলের ক্যাডার বাহিনী এলাকায় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যেও আতঙ্ক বিরাজ করছে। জালাল উদ্দিনের পরিবারের সদস্যরাও আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

সরেজমিন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রূপগঞ্জের মাছিমপুর এলাকার সন্ত্রাসী শাহরিয়ার পান্না ওরফে ভিপি সোহেল ও তার ক্যাডার বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ইয়াবা, ফেনসিডিল ও হেরোইনের ব্যবসা করছে। ভিপি সোহেলের বাড়ি মীর কুটিরছেও গ্রামে। পাশের গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে নজরুল ইসলাম ছিলেন প্রতিবাদী যুবক ও কৃষিজীবী। সোহেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ গ্রামের লোকজন নজরুলের পক্ষে অবস্থান নেন। এতে কোণঠাসা হয়ে পড়ে ভিপি সোহেল ও তার ক্যাডার বাহিনী। তাদের অন্যায়-অপকর্মের প্রতিবাদ করলে ক্ষুব্ধ হয়ে ভিপি সোহেল ও তার ক্যাডার বাহিনী ২০১১ সালের ৫ নভেম্বর নজরুলকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় নজরুলের বাবা জালালউদ্দিন সন্ত্রাসী ভিপি সোহেল ও তার লোকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। এরপর থেকে আসামিরা মামলা তুলে নিতে জালালউদ্দিনের ওপর চাপ প্রয়োগ করে। অন্যথায় তার পরিবারের অন্যদেরও হত্যা করা হবে বলে হুমকি দিয়ে আসছিল। ১৬ মে ওই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। এরই মধ্যে ভিপি সোহেল ও তার ক্যাডার বাহিনীর কয়েকজন জামিনে ছাড়া পান। এরপর গত ১৪ মে জালালউদ্দিনকে বাড়ি থেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করা হয়। পরে তাকে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজে ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে ভিপি সোহেলের উত্থান ঘটে। এরপর তিনি ওই কলেজের ভিপি নির্বাচিত হয়ে এলাকায় গড়ে তোলেন ক্যাডার বাহিনী। জালালউদ্দিন হত্যার ঘটনায় গত ১৫ মে তার স্ত্রী সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে ভিপি সোহেলসহ ২১ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন। পরদিন আড়াইহাজার থেকে ইকবাল নামের একজনকে আটক করা হয়। গত বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চাঁদনী রূপমের আদালতে জালাল হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে আসামি ইকবাল হোসেন। কিলিং মিশনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়া ইকবালের জবানবন্দি ছিল লোমহর্ষক। নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক হাবিবুর রহমান স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। মামলার বাদী সেলিনা আক্তার বলেন, তার পরিবারের সদস্যরা ভিপি সোহেলের ভয়ে এলাকাছাড়া। রূপগঞ্জ থানার ওসি মাহমুদুল ইসলাম জানান, ভি পি সোহেল পলাতক রয়েছে, তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

 

সর্বশেষ খবর