শুক্রবার, ২২ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

পাহাড়ে রসাল ফলের ঘ্রাণ

পার্বত্যাঞ্চলে এ বছর মৌসুমি ফলের বাম্পার ফলন হয়েছে। টিলা আর বাগানে কাঁচা-পাকা ঝুলন্ত থোকা থোকা আম আর লিচু দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। আর এসব টসটসে রসাল ফল ম-ম ঘ্রাণ ছড়াচ্ছে পাহাড়ে। এসব ফল দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও মিষ্টি। হাট-বাজারগুলোয় এখন ফলের সমারোহ। প্রায় প্রতিদিন বসে মৌসুমি ফলের হাট। এসব ফলের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় ও উন্নত জাতের লিচু, কাঁচা-পাকা আম, তরমুজ, কাঁঠাল, আনারস। মানুষের আকর্ষণ এখন লিচু ও আমের দিকে। তবে পাহাড়ি এলাকায় আম, কাঁঠাল, আনারস, লিচু, তরমুজসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফলের প্রচুর ফলন হয়েছে। রাঙামাটির বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, লিচুর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাজারে এসেছে আম, কাঁঠাল, আনারস। ব্যবসায়ীরা জানান, মোজাফফরি জাতের লিচুও আবাদ হচ্ছে প্রচুর। এ ছাড়া এখন পাহাড়ে অধিক চাষাবাদ হচ্ছে চায়না-২, চায়না-৩ জাতের লিচু। তিন পার্বত্য জেলায় উন্নত জাতের লিচুর উৎপাদন হচ্ছে প্রচুর। প্রতিদিন শত শত ট্রাক ও বিভিন্ন যানবাহন ভর্তি মৌসুমি ফল নিয়ে যাওয়া হচ্ছে রাঙামাটির বাইরে। জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বালুখালী, বন্দুভাঙ্গা, সুবলং, কুতুকছড়ি, মৈত্রীনগর, সাপছড়ি, মগবান, জীবতলীসহ বিভিন্ন গ্রামে ফলের বাগান করা হয়েছে। এসব বাগান অধিকাংশই দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়। এ ছাড়া নতুন নতুন স্থানে ফলদ বাগান গড়ে উঠছে। এসব বাগানে বোম্বে লিচুর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চাষ করা হয়েছে আম্রপালির। এ বছর আমের ফলন রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। অন্যদিকে বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতেও বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানা গেছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক রমণীকান্তি চাকমা জানান, তিন পার্বত্য জেলায় মৌসুমি ফলের মধ্যে বিশেষ করে আম ও লিচুর উৎপাদন ভালো হয়েছে।

শুধু রাঙামাটি জেলায় লিচুর আবাদ হয়েছে প্রায় ১৬ দশমিক ২০ হেক্টর জমিতে। ইতিমধ্যে লিচুর বাম্পার ফলন আসতে শুরু করেছে। এবার লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৯ দশমিক ১ টন ধরা হয়েছে। অন্যদিকে আমের চাষ হয়েছে ৩ দশমিক ৫ হেক্টর জমিতে। কালবৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টির কারণে অনেক ফল নষ্ট হয়ে যাওয়ার পরও কৃষক আশানুরূপ ফলন পেয়েছে। তবে মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী ও কৃষক অভিযোগ করে বলেন, মৌসুমি ফলের বাম্পার ফলন হলেও প্রতি বছর প্রচুর ফলমূল সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া শুষ্ক মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদের পানি শুকিয়ে নৌ-যোগাযোগ বিঘি্নত হচ্ছে। সঠিক সময়ে উৎপাদিত ফলমূল বাজারজাত করা যাচ্ছে না। পাশাপাশি কৃষক একশ্রেণির ফরিয়ার কাছে ঠকছে। স্থানীয় পর্যায়ে আড়ত ও হিমাগার স্থাপন করা হলে তারা মধ্যস্বত্বভোগীদের হাতে আর জিম্মি থাকবে না। কোল্ড স্টোরেজ ও আড়ত না থাকায় বাধ্য হয়ে পণ্য পানির দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। এদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ পচনশীল পণ্য সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে হিমাগার স্থাপনের কথা বললেও কার্যত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ খবর