শনিবার, ২৩ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা
বাজারদর

রোজার আগেই বেসামাল নিত্যপণ্যের বাজার

রোজার আগেই বেসামাল নিত্যপণ্যের বাজার

রোজার আগেই বেসামাল রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজার। রোজার অন্যতম প্রধান উপকরণ প্রতি কেজি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়। আরও বেড়েছে ছোলা, আদা ও ডালসহ কিছু সবজির দাম। এমন অনেক পণ্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে কৌশলে। একটি মুনাফালোভী সিন্ডিকেট এসব পণ্য আটকে রেখে দাম বাড়াচ্ছে। তাই এখন থেকেই কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং করার আহ্বান ক্রেতাদের। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান ও মিরপুর বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।

রমজানে বাড়তি চাহিদার অন্যতম পণ্য ছোলা। এর মধ্যে দাম বাড়তে শুরু করেছে পণ্যটির। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি মণ ছোলায় ৮০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। ছোলার দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা জানান, সরবরাহ কম তাই দাম বৃদ্ধি। তবে ছোলার সরবরাহ কেন কম তার কোনো যৌক্তিক কারণ বলতে পারছেন না তারা। সদ্য শেষ হলো ছোলা উৎপাদনের মৌসুম।

গতকাল রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ছোলা ৫৮ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে ছোলার দাম ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি দুই থেকে আড়াই টাকা বাড়লেও খুচরা বাজারে বেড়েছে ৫ টাকা হারে। রোজার সময় দাম বাড়ানো হলে সবার দৃষ্টিতে আসবে। তাই এ খাতের অসাধু সিন্ডিকেট আগে থেকেই দাম বাড়িয়ে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে। খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, কিছুদিন পর থেকে ছোলার বাড়তি বিক্রি শুরু হবে। সেদিকে অনেকেই নজর দিতে শুরু করেছেন। গতকাল প্রতি কেজি দেশি পিয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর প্রতি কেজি আমদানি পিয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩২ থেকে ৩৪ টাকা। যা আগের সপ্তাহে ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা। এ ছাড়া প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। গত সপ্তাহে আদা বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। মানভেদে কেজিতে আদার দাম বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে বেড়েছে মুগ ডালের দাম। আগের সপ্তাহের ১১০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকা কেজিতে। এ ছাড়া প্রতি কেজি দেশি মসুর ডাল ১১০ থেকে ১১২ টাকা, ভারতীয় মসুর ডাল ৮৫-৯০ টাকা, বুটের ডাল ৪০-৪৫ টাকা, মাষকলাই ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকায়। আর প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০-১৬৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ১৭০-১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ৫ টাকা করে বেশি। এ ছাড়া ফার্মের ডিম প্রতি হালি ৩৬ টাকা, সাদা ডিম ৩২ টাকা এবং দেশি মুরগি ও হাঁসের ডিম ৪০ টাকা। প্রতি কেজি কাঁকরোল ৬০, চাল কুমড়া ২৫-৩০, করল্লা ৫০-৬০, গাজর ২৫-৩০ টাকা, পটোল ৪০, চিচিঙ্গা ৪০, মিষ্টি কুমড়া ২৫-৩০, ঢেঁড়স ৪০, বরবটি ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি হালি কাঁচাকলা ২৫-৩০ টাকা ও লেবু ২০-৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি আলু ১৭-১৮, দেশি রসুন ৮০, চায়না রসুন ১০০, একদানা রসুন ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে এক অাঁটি লালশাক ১০-১২, পুঁইশাক ১০, ডাঁটা শাক ১০-১২, লাউশাক ১৫-২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি খোলা চিনি ৪৪-৪৬ টাকা, প্যাকেট চিনি ৪৮-৫০ টাকা, প্রতি কেজি খোলা আটা ৩২ টাকা, প্যাকেট আটা প্রতি ২ কেজি ৬৮-৭০ টাকা, প্রতি কেজি খোলা সয়াবিন তেল ৯০ টাকা ও প্রতি ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ টাকা দরে। তেলের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কেজি প্রতি দুই টাকা করে কমেছে। মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকারভেদে বড় আকারের প্রতি কেজি রুই ৩০০-৪০০ টাকা, মাঝারি আকারের রুই ২২০-২৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি কাতল ৩০০-৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০-২০০ টাকা, সিলভার কার্প ১৬০-২০০ টাকা, পাঙ্গাশ ১৪০-১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে কেজি প্রতি বাটা মাছ ১৬০-২৫০ টাকা, শিং ৪৫০-৯০০, কৈ ২৫০-২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ৬০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের প্রতি হালি ইলিশ ৩২০০ টাকা এবং মাঝারি আকারের প্রতি হালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার টাকায়।

 

 

সর্বশেষ খবর