মঙ্গলবার, ২৮ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

প্রশাসনের শীর্ষ চার পদে রদবদল হচ্ছে

প্রশাসনের শীর্ষ চার পদ মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্যসচিব, অর্থসচিব ও জনপ্রশাসন সচিবের পদে পরিবর্তন আসছে। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ চার পদের রদবদল নিয়ে প্রশাসনের সর্বস্তরে চলছে এখন ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা ও আলোচনা। তবে এ চার পদে পদায়নের ব্যাপারে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন না করা ও প্রশাসনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ না দেওয়ার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান কঠোর বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এ ছাড়া এ বছরই সচিব ও সচিব পদমর্যাদার ১৪ জন কর্মকর্তা অবসরে যাবেন।
সরকারের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা আগামী অক্টোবরে বিশ্বব্যাংকের বিকল্প পরিচালক হিসেবে যোগদান করবেন। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব ইতিমধ্যে সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে বিশ্বব্যাংকে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আগামী ডিসেম্বরের ১৪ তারিখে অবসরে যাওয়ার কথা থাকলেও নিতান্ত ব্যক্তিগত কারণে তিনি অবসরের আগেই বিশ্বব্যাংকে যোগ দিচ্ছেন। সে কারণে অক্টোবরে মন্ত্রিপরিষদের সচিবের পদটি শূন্য হতে যাচ্ছে। এর ঠিক তিন মাস পর ৬ জানুয়ারি অবসরে যাচ্ছেন বর্তমান মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ। আগামী ডিসেম্বরের ২৯ তারিখে অবসরে যাচ্ছেন অর্থবিভাগের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ। ফলে সরকারের এ তিনটি পদ শূন্য হচ্ছে। সেই সঙ্গে এ তিন পদ নিয়ে প্রশাসনের সর্বত্র এখন চলছে জল্পনা-কল্পনা। এ তিন পদের জন্য মেধার ক্রমানুসারে ভূমি সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, বাণিজ্য সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, স্বরাষ্ট্র সচিব মো. মোজাম্মেল হক খান এবং জনপ্রশাসন সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীর নাম শোনা যাচ্ছে।
জানা গেছে, মন্ত্রিপরিষদ সচিব পদটি প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদ। এ পদটি হলো প্রশাসনের ‘লাইন পোস্ট’। অন্যদিকে মুখ্যসচিব পদটি হলো সরকারের প্রয়োজনে সৃষ্ট পদ। প্রশাসনের শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য এতকাল মন্ত্রিপরিষদ সচিব পদে পদায়নের ক্ষেত্রে সব সময়ই জ্যেষ্ঠতার নীতি অনুসরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে মুখ্যসচিব পদে প্রায় সব সময়ই সরকার প্রধানের পছন্দের ও আস্থাভাজন কর্মকর্তাকে পদায়ন করা হয়। সে ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতাকে প্রধান্য দেওয়া হয় না। বর্তমান মুখ্য সচিবের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পদায়নের ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা কখনো লংঘন করা হয়নি। এর আগে আওয়ামী পন্থি বিবেচনা করে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আবুল কাশেমকে অবসরে দিয়ে বিদেশে পদায়ন করা হয় এবং পরে জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী মন্ত্রিপরিষদ সচিব নিয়োগর নজিরও রয়েছে। এ পদের জন্য মেধার ক্রমানুসারে যাদের নাম আছে তাদের মধ্যে বর্তমান বাণিজ্য সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুনকে আওয়ামী পন্থি হিসেবে চিহ্নিত করে ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনই সিরাজগঞ্জের ডিসি পদ থেকে প্রত্যাহার করে। পরে ওই তত্ত্বাবধায়ক সরকার একই অভিযোগে বর্তমান স্বরাষ্ট্র সচিব মো. মোজাম্মেল হক খান এবং জনপ্রশাসন সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীকে প্রত্যাহার করে। এদিকে জনপ্রশাসন সচিবের পদে পদায়নের জন্য জ্বালানি বিভাগের সচিব আবু বকর সিদ্দিক ও পূর্ত সচিব মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহর নাম শোনা যাচ্ছে। তাদের দুজনেরই জনপ্রশাসনে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে।
এ ছাড়া এ বছরের মধ্যে আরও অবসরে যাচ্ছেন মো. আবদুল মান্নান হাওলাদার, শফিক আলম মেহেদী, সৈয়দ মন্জুরুল ইসলাম, মো. নজরুল ইসলাম খান, মিকাইল শিপার, ড. শেলীনা আফরোজা, মো. নজরুল ইসলাম, আরস্ত খান, নূর মোহাম্মদ, মো. আজিজুর রহমান, মো. শাহজাহান আলী মোল্লা ও পরীক্ষিৎ দত্ত চৌধুরী।

সর্বশেষ খবর