মঙ্গলবার, ২৮ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

ভারতের পাঞ্জাবে জঙ্গি হামলা নিহত ১১

ভারতের পাঞ্জাবের গুরুদাসপুরে যাত্রীবাহী বাস, থানাসহ একাধিক জায়গায় সন্ত্রাসী হামলায় একজন পুলিশ সুপারসহ ১১ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিন জঙ্গিও আছেন। জঙ্গিদের হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন বেশ কয়েকজন। নিহত পুলিশ কর্মকর্তার নাম বলজিৎ সিং। তিনি গুরুদাসপুরের এসপির (গোয়েন্দা বিভাগ) দায়িত্বে ছিলেন। এদিকে ভারত সরকার এ ঘটনার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে।
জানা গেছে, গতকাল ভোর ৫টার দিকে গুরুদাসপুরে জম্মুগামী একটি যাত্রীবাহী বাসকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায় সন্ত্রাসীরা। এতে ছয়জন আহত হন। এরপরই সড়ক থেকে একটি মারুতি গাড়ি ছিনতাই করে সেটি নিয়ে তারা গুরুদাসপুরের দীনানগর থানার ভিতরে ঢোকেন। গাড়িতে উঠে জঙ্গিরা সেনাবাহিনীর পোশাক পরেন। তাদের ব্যাগে প্রচুর অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। থানা এলাকায় ঢুকেই জঙ্গিরা পুলিশ লক্ষ্য করে গুলি চালান। আচমকা এ হামলায় থানার মধ্যে থাকা চার পুলিশ কর্মী প্রাণ হারান। এরপরই পাল্টা গুলি চালায় পুলিশ। পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে শুরু হয় বন্দুকযুদ্ধ। গুলিবর্ষণে মারাত্মক জখম হন গুরুদাসপুরের পুলিশ সুপারও। তড়িঘড়ি তাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। থানার পেছনে অবস্থিত একটি হাসপাতালেও হামলা চালান সন্ত্রাসীরা। সেখানেও সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই রোগী মারা যান। সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে একটি খাবারের দোকানের মালিকও প্রাণ হারান। পুলিশের গুলিতে এক সন্ত্রাসী নিহত হলেও বাকিরা থানার মধ্যেই লুকিয়ে থাকেন। এরপরই সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করতে পাঞ্জাব পুলিশের সঙ্গে যোগ দেয় সেনাবাহিনী। অবশেষে টানা ১২ ঘণ্টা ধরে বন্দুকযুদ্ধের পর জঙ্গিমুক্ত হয় থানা। বিকালে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অভিযানে অংশ নেওয়া তিন জঙ্গিরই মৃত্যু হয়েছে। তবে এ সন্ত্রাসী হামলার পেছনে কোনো জঙ্গি সংগঠন দায় স্বীকার না করলেও গোয়েন্দা বিভাগের আইজি গৌরব যাদব জানিয়েছেন ‘এ হামলার পেছনে লস্কর-ই-তৈয়বা ও জইশ-ই-মোহাম্মদের মতো পাকিস্তানের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী সংগঠন জড়িত।’ অন্যদিকে দীনানগর থানায় সন্ত্রাসী হামলার সময়ই দীনানগরের কাছে রেললাইনে মেলে পাঁচটি তাজা বোমা। এরপরই দীনানগর এবং পাঠানকোটের মধ্যে ট্রেন পরিসেবা সাময়কি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ গিয়ে সেগুলোকে নিষ্ক্রিয় করে। জঙ্গি হামলার পরই পাঞ্জাব, জম্মু-কাশ্মীর, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, গুজরাট, পশ্চিমবঙ্গসহ সব রাজ্যে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
 নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে ভারতের নর্থ ব্লক, সংসদ ভবন, রাষ্ট্রপতি ভবনে। পাঞ্জাব রেল স্টেশনে মোতায়েন করা হয়েছে প্রশিক্ষিত কুকুরবাহিনীকে। ভারত-পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর আরও কড়া নজরদারির নির্দেশ দিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রাজনাথ এ হামলার পেছনে পাকিস্তান দায়ী ইঙ্গিত করে বলেন, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে আমরা শান্তি চাই কিন্তু দেশের জাতীয় সম্মান বিসর্জন দিয়ে নয়।’ তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে সীমান্তে কেন গোলাবর্ষণ চালানো হচ্ছে, যেখানে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানের সঙ্গে আমরা সুসম্পর্ক চাইছি।’ হামলার পরই পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে সকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শীর্ষ মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।

সর্বশেষ খবর