বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

আনন্দে ভাসছে ছিটমহল, কাল রাতে উড়বে বেলুন

আনন্দে ভাসছে ছিটমহল, কাল রাতে উড়বে বেলুন

সেই মাহেন্দ্রক্ষণের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে ছিটমহলবাসী। ৬৮ বছরের অবরুদ্ধ জীবনের অবসান ঘটবে। আনন্দ উদযাপনের সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছেন তারা। বাড়িতে বাড়িতে চলছে নানা ধরনের কেনা কাটা। আকাশে উড়াবে বলে শিশু-কিশোররা কিনেছে বেলুন। সাংস্কৃতিক কর্মীরা মহড়ায় ব্যস্ত। চলছে পারিবারিক আমন্ত্রণ আর বিশেষ খাবার দাবারের আয়োজন। ৩১ জুলাই মধ্য রাতে ভারত-বাংলাদেশের ১৬২ ছিটমহল হস্তান্তরিত হবে। ভারতের পক্ষে কুচবিহার জেলা প্রশাসক এবং বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী এবং পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসকদের মধ্যে এই হস্তান্তর অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে ছিটমহলবাসী এবং ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি বর্ণাঢ্য নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ৬৮ বছর অবরুদ্ধ জীবনের অবসানে এ দিন ছিটমহলের প্রত্যেকটি মুসলিম পরিবারে জ্বলবে ৬৮টি মোমবাতি আর হিন্দু পরিবারগুলোয় জ্বলবে ৬৮টি প্রদীপ। ছিটমহলের সড়কগুলোকে মশাল জ্বালিয়ে আলোকিত করা হবে। বর্ষার নীল আকাশে উড়বে আকাশ প্রদীপ আর বেলুন। বাদ্য বাজনায় মুখরিত হয়ে উঠবে প্রত্যন্ত এসব গ্রামাঞ্চল। রাতব্যাপী চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পঞ্চগড়ের গারাতি ছিটমহলে সকালে আয়োজন করা হয়েছে খেলাধুলা প্রতিযোগিতা। বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। রাতে মঞ্চস্থ হবে নাটক। জানা গেছে বাংলাদেশের মধ্যে ১১১ ছিটমহল এবং ভারতে ৫১ ছিটমহলে এসব অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। ১৯৭৪ সালে ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির পর থেকে দুদেশের ১৬২টি ছিটমহলের নাগরিকত্বহীন মানুষ নিজের পরিচয়ের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকতে ছিটমহল বিনিময় করতে পারেননি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছিটমহলের বন্দী মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে ভারতের তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে প্রটোকল চুক্তি স্বাক্ষর এবং বর্তমান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সময় স্থলসীমান্ত বিল লোকসভায় পাস হয়েছে। আর যে কারণে দুদেশের ১৬২টি ছিটমহলে বসবাসকারী রাষ্ট্রহীন মানুষগুলো তাদের নাগরিক অধিকার ফিরে পাওয়ায় ৩১ জুলাই সন্ধ্যার পরই প্রত্যেকটি ছিটমহলের মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে পড়বেন।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার গারাতি ছিটমহলের চেয়ারম্যান ও নীলফামারী-পঞ্চগড় জেলার ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সভাপতি মফিজার রহমান জানান, 'দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ৩১ জুলাই দিন-রাতব্যাপী আনন্দ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিটি ছিটমহলেই নানা ধরনের অনুষ্ঠান হবে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম আজম জানান, ৩১ জুলাই মধ্যরাত থেকে বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় ছিটমহলের অধিবাসীরা বাংলাদেশি এবং ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের ছিটমহলের অধিবাসীরা ভারতীয় হয়ে যাবেন।

 

সর্বশেষ খবর