বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা
মিলন হত্যা মামলা

বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তাকে আদালতে তলব

বহুল আলোচিত নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে কিশোর সামছুদ্দিন মিলন হত্যা মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তাকে (ওসি ডিবি) রেকর্ডকৃত সিডিসহ তলব করেছেন আদালত। এ মামলার ধার্য তারিখে গতকাল সকালে কোম্পানীগঞ্জ আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সমরেশ শীল এ আদেশ দেন। জানা যায়, ধার্য তারিখের আগে তদন্ত কর্মকর্তা এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন এবং একইভাবে মামলা চালাতে অপারগতা প্রকাশ করে মামলার বাদী মিলনের মা কোহিনুর আক্তার মামলা প্রত্যাহারের জন্য আদালতে দরখাস্ত দাখিল করেন। এ নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন প্রশাসনের নজরে আসে। গতকাল ছিল মামলার তারিখ। আদালত মামলা শুনানির জন্য আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর আবার দিন ধার্য করেন। একই সঙ্গে মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ মামলার রেকর্ডকৃত সিডি তলবের নির্দেশ দেন। জানা যায়, ২০১১ সালের ২৭ জুলাই নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের চরকাঁকড়া ইউনিয়নের টেকের বাজারে বিক্ষুব্ধ জনতার সামনে পুলিশের গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়ার পর কিশোর সামছুদ্দিন মিলকে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে হত্যা করা হয়। এ নিয়ে তখন বাংলাদেশ প্রতিদিনসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হলে দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে এ ঘটনায় নিহত মিলনের মা ২০১১ সালের ৩ আগস্ট নোয়াখালী ২ নম্বর আমলি আদালতে হত্যা মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে একই বছর ৮ আগস্ট মামলাটি কোম্পানীগঞ্জ থানায় রেকর্ড হয়। শুরুতে মামলাটি কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ তদন্ত করলেও পরে নোয়াখালী ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি ওসি) আতাউর রহমান চলতি মাসের ১ জুলাই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে সদর সার্কেল অফিসে পাঠান। পরে একই সপ্তাহে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এতে বাদী মিলনের মা কোহিনুর আক্তার মামলাটি চালাবেন না বলেও উল্লেখ করা হয়।
 এর আগে এ মামলায় স্থানীয়ভাবে মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ভিডিওচিত্র দেখে গণপিটুনিতে অংশ নেওয়া ২৬ আসামিকে শনাক্ত করে পুলিশ। যাদের মধ্যে ৫ জনকে আটকের পর দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে জানা গেছে।
নিহত মিলনের মা কোহিনুর আক্তার জানান, ঘটনার ৪ বছর পরও মামলার কিছুই হয়নি। এ জন্য আমি হতাশ। তা ছাড়া আমার বাড়ি থেকে ঘটনাটি ঘটেছে অনেক দূরে, সেখানকার লোকজনকে মামলার সাক্ষী দেওয়ার জন্য বার বার তাদের কাছে গেলেও কেউ আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে রাজি হয়নি। আমি গরিব মানুষ মামলা চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। এ জন্য মামলা চালাতে আমার আর ইচ্ছা নেই। আমি পারছি না, আমি মিলনের বাবার সঙ্গে কথা বলে আদালতে মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য দরখাস্ত করেছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এটিএম মহিবউল্লাহ জানান, আদালতে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পরবর্তী ১৬ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তদন্তকালীন সময়ে রেকর্ডকৃত সব কাগজপত্র (সিডি) উপস্থাপন করতে বলেন। একই সময় মামলার বাদী নিহত মিলনের মা  কোহিনুর আক্তারকে হাজির হওয়ার আদেশ দেন।
এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা (ডিবি ওসি) জানান, মামলাটি দীর্ঘ তদন্তের পর চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ২ নম্বর আমলি আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। বাদী মামলা চালাবেন না বলে জানিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর