বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

বিএনপির বিরুদ্ধে লড়ছে বিএনপি

রাঙামাটি জেলার বিএনপি লড়ছে বিএনপির বিরুদ্ধে। দলীয় কোন্দলে বেসামাল অবস্থা। এই কোন্দল গড়িয়েছে রাজপথ থেকে আদালত পর্যন্ত। ফলে সাংগঠনিকভাবে দল বিধ্বস্ত। যদিও দলের নেতারা তা স্বীকার করতে নারাজ। তাদের মতে, রাঙামাটিতে বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থান যথেষ্ট শক্তিশালী। দলের সব সাংগঠনিক কার্যক্রমই গুছিয়ে আনা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাঙামাটি জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম নেই বললেই চলে। দলীয় কর্মসূচিও পালন হচ্ছে না। সূত্র জানায়, ২০০৯ সালে রাঙামাটি জেলা বিএনপির সম্মেলন হয়। তাতে সাবেক জেলা যুগ্ম-জজ অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ান সভাপতি, সাবেক পৌর বিএনপির সভাপতি মো. শাহ আলম সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা যুবদলের সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম পনির সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ওই সময় জেলা, উপজেলাসহ তৃণমূলে সব সাংগঠনিক কাজ শেষ করে দল গোছানো হয়েছিল। মিটিয়ে ফেলা হয়েছিল অনেক বিরোধ। জেলা, উপজেলায় কমিটি হয়েছিল নবীন ও প্রবীণদের সমন্বয়ে। সমন্বয় করা হয়েছিল পাহাড়ি-বাঙালি নেতৃত্বেরও। বহুসংখ্যক পাহাড়ি নেতা-কর্মী যোগ দিয়েছিলেন বিএনপিতে। নেতৃত্বের শীর্ষে ছিলেন দীপেন দেওয়ান। কিন্তু বর্তমানে কোন্দলে জড়িয়ে সাংগঠনিক সমস্যায় জর্জরিত জেলা বিএনপি। মূলত নেতৃত্বকে ঘিরেই কোন্দলের সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন কমিটিতে পদ-পদবি নিয়ে এ লড়াই এখন মহীরূহে রূপ নিয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জেলা বিএনপির সভাপতি দীপেন দেওয়ানের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করছেন কতিপয় নেতা। তিনি যাতে ঢুকতে না পারেন সে জন্য দলীয় অফিস রাখা হচ্ছে তালাবদ্ধ করে। বিগত সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে এ গ্রুপিং আরও তুঙ্গে উঠেছে। এখন গ্রুপগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দীপেন দেওয়ান গ্রুপ, মণীষ দেওয়ান গ্রুপ, শাহ আলম গ্রুপ, ভূট্টো গ্রুপ। এ অবস্থায় দলের ভিতর থেকেই অভিযোগ উঠেছে, জেলা বিএনপির কতিপয় শীর্ষ নেতার নেতৃত্বে বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর সঙ্গে টেন্ডারবাজিতে জড়িত। তারা দলের কোটা নিয়ে ঠিকাদারি কাজের ভাগ বসিয়ে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ান বলেন, ‘কিছু নেতা-কর্মী দল ভাঙার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা হাত মিলিয়েছে আওয়ামী লীগের সঙ্গে। তারা আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে মরিয়া। পাশাপাশি ব্যস্ত ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলে।’
অন্যদিকে রাঙামাটি পৌর বিএনপির সভাপতি ও পৌরসভা মেয়র সাইফুল ইসলাম চৌধুরী ওরফে ভূট্টো বলেন, ‘রাঙামাটিতে বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থান খুব ভালো। তবে জেলা সভাপতি দীপেন দেওয়ানের ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডের ফলে দলে বিভেদ তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় দলের জন্য যিনি নিঃস্বার্থভাবে কাজ করবেন আগামী নির্বাচনে তাকেই প্রার্থী করা হবে, অন্য কাউকে নয়।’

সর্বশেষ খবর