বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

শুনানিতে ঢাকা আইনজীবী

সমিতির সদস্য সারোয়ার মিয়ার নেতৃত্বে এস এম দেলওয়ার হোসেন, আবদুস সালাম ভূঁইয়া, মৌসুমী বেগম ও শামসুল আলমসহ পাঁচজন আইনজীবী আদালতে তারেক সাঈদের জামিন শুনানিতে অংশ নেন। তবে শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন। জামিনের শুনানিতে তারেক সাঈদের পক্ষে আইনজীবী দেলওয়ার হোসেন আদালতকে বলেন, তারেক সাঈদ অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন। তার সুনামের কারণেই তিনি র‌্যাব-১১-এর সিও হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি ছিলেন একজন ইউনিট প্রধান। ভালো কাজের জন্য দেশে-বিদেশে তারেক সাঈদ অনেকবার পুরস্কৃতও হয়েছেন। এ সময় আদালত তারেক সাঈদের আইনজীবীকে বলেন, ‘তিনি কোথায় কী করেছেন সেটি বিষয় না। আপনি কিসের ওপর ভিত্তি করে তার জামিন চান সেটি বলেন।’ প্রত্যুত্তরে আইনজীবী বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তারেক সাঈদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।’ এ সময় বাদীপক্ষের আইনজীবীরা জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, সাত খুনের ঘটনায় বিভিন্ন আসামির জবানবন্দিতে তারেক সাঈদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা বলে জবানবন্দিগুলোতে প্রকাশ পেয়েছে। দুই পক্ষের যুক্তিতর্কের পর তারেক সাঈদের জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত। এদিকে শুনানিতে অংশগ্রহণকারী তারেক সাঈদের অপর আইনজীবী সারোয়ার মিয়া সাংবাদিকদের জানান, নিয়মিত আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন তারা। নারায়ণগঞ্জ আদালতের এপিপি ফজলুর রহমান বলেন, এ মামলার পলাতক ১৩ আসামিকে গ্রেফতারের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া এদিন তারেক সাঈদের পক্ষে জামিন আবেদন করা হলেও আদালত তা নামঞ্জুর করেছেন। কারণ তিনি পুরো ঘটনার নায়ক। বিভিন্নজনের জবানবন্দিতে তারেক সাঈদের নাম উঠে এসেছে। অন্যদিকে শুনানি চলাকালে এর আগে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া ল্যান্স করপোরাল রুহুল আমিন তার আদালতে দেওয়া জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেন। আদালত এ বিষয়ে কোনো নির্দেশ দেননি। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে থেকে প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার এবং তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক ইব্রাহিম অপহৃত হন। ৩০ এপ্রিল বিকালে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের এবং ১ মে সকালে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। আলোচিত সাত খুনের এ ঘটনায় নিহত প্যানেল মেয়র নজরুলের স্ত্রী বিউটি একটি এবং নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা ডা. বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে অপর একটি মামলা করেন। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের ১১ মাস পর গত ৮ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী সংস্থা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) দুটি মামলায় আদালতে অভিন্ন চার্জশিট জমা দেয়। চার্জশিটে নূর হোসেন, র‌্যাব কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। তাদের মধ্যে ২২ জন গ্রেফতার রয়েছেন আর ১৩ জন পলাতক।

সর্বশেষ খবর