বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সৌদি থেকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে কামরুলকে

রাজন হত্যায় সিলেটে সাক্ষ্যগ্রহণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলার প্রধান আসামি কামরুল ইসলামকে ফিরিয়ে আনতে পুলিশের ৩ কর্মকর্তা ১২ অক্টোবর সৌদি আরব যাচ্ছেন। পুলিশ সদর দফতরের অনুরোধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। কামরুলকে আনতে সৌদি আরব যাচ্ছেন পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহাবুবুল করিম, সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ এবং সহকারী পুলিশ কমিশনার এ এফ এফ নেজাম উদ্দিন। গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ পুলিশের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন, শিশু রাজন হত্যা মামলাটিতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্র তৈরিতে আমরা তৎপর। নানা নিয়মনীতি মেনে এ আসামিকে নিয়ে আসতে পারা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আমাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টারই অংশ। গত ৮ জুলাই রাজনকে চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন শেখপাড়ায় নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। সিলেটের জালালাবাদ থানা এলাকার বাদেয়ালি গ্রামের বাসিন্দা শিশু রাজন সবজি বিক্রি করত। তার লাশ গুম করার সময় ধরা পড়ে একজন। এ হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা হিসেবে অভিযুক্ত কামরুল ইসলাম পালিয়ে সৌদি আরব চলে গেলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাকে ধরে পুলিশে দেন। কামরুলের দেশ ছেড়ে পালানোর ঘটনায় কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ২৭ জুলাই সিলেট মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) আলমগীর হোসেন, উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম ও এসআই মো. জাকির হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। রাজন হত্যার ঘটনায় তদন্ত শেষে ১৩ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। পুলিশের উদ্যোগে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রিয়াদ এনসিবির সহযোগিতা চেয়ে রেড নোটিস ইস্যুর জন্য অনুরোধ জানানো হয়। পুলিশ সদরের অনুরোধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যম হয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বন্দী বিনিময়ের জন্য সৌদি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি কর্তৃপক্ষ কামরুলকে ফেরত দিতে সম্মত হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। সিলেটে শিশু রাজন হত্যা মামলায় আরও চারজনের সাক্ষ্য গ্রহণ সিলেটে শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলায় গতকাল আরও চারজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। দুপুর ১২টায় মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আকবর হোসেন মৃধা সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেন। এ নিয়ে আলোচিত এ মামলায় মোট ১০ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিলেন। গতকাল সাক্ষ্য প্রদানকারীদের মধ্যে ছিলেন রাজনের গ্রাম বাদেয়ালির বাসিন্দা ইশতিয়াক আহমদ রায়হান, নিজাম উদ্দিন, পাশের গ্রাম অনন্তপুরের আবদুজ জাহির মেম্বার ও শেখপাড়ার পংকি মিয়া। ৪ অক্টোবর সাক্ষ্য দেন রাজনের মা লুবনা বেগম, চাচা আল আমিন, একই এলাকার জিয়াউল হক ও মাসুক মিয়া। এর আগে ১ অক্টোবর রাজনের বাবা আজিজুর রহমান ও মামলার বাদী জালালাবাদ থানার এসআই (বরখাস্তকৃত) আমিনুল ইসলাম সাক্ষ্য প্রদান করেন।

২২ সেপ্টেম্বর ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে রাজন হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন করেন আদালত। অভিযুক্তরা হচ্ছেন সৌদি আরবে আটক সিলেট সদর উপজেলার কুমারগাঁও শেখপাড়ার মৃত আবদুল মালিকের ছেলে কামরুল ইসলাম, তার ভাই শামীম আহমদ, মুহিদ আলম, আলী হায়দার, কুমারগাঁওয়ের পাভেল, তাজউদ্দিন আহমদ বাদল, ময়না চৌকিদার, রুহুল আমিন, দুলাল আহমদ, পূর্ব জাঙ্গাইল গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে ভিডিওচিত্র ধারণকারী নুর মিয়া, ফিরোজ মিয়া, আছমত উল্লাহ ও আয়াজ আলী।

আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মফুর আলী জানিয়েছেন, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ৮, ১১, ১২, ১৩ ও ১৪ অক্টোবর অন্য সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে। প্রসঙ্গত, ১৬ আগস্ট রাজন হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে সামিউল আলম রাজনকে নির্মম নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়।

সর্বশেষ খবর