শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

যৌথভাবে এলপিজি আমদানির প্রস্তাব ভারতের

চাইছে ট্রানজিট সুবিধা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের জ্বালানি গ্যাসের চাহিদা মেটাতে যৌথভাবে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস-এলপিজি আমদানির প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন লিমিটেড-আইওসিএল সম্প্রতি সরকারকে জানিয়েছে, ভবিষ্যতের চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখে তারা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন-বিপিসির সঙ্গে যৌথভাবে এলপিজি আমদানির অবকাঠামো (মজুদ) গড়ে তুলতে চায়। এ জন্য বিপিসি ও ইন্ডিয়ান অয়েলের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তিও (এমওইউ) হতে পারে বলে সংস্থাটি উল্লেখ করেছে।

সম্প্রতি ইন্ডিয়ান অয়েলের একাধিক কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বিপিসির সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এদিকে যৌথভাবে এলপিজি আমদানির প্রস্তাবের পাশাপাশি ট্রানজিট সুবিধায় দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে পেট্রোলিয়াম গ্যাস পরিবহনের সুবিধাও চেয়েছে ভারত। ১৪ অক্টোবর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশনের পরিচালক ডি সেন উল্লেখ করেছেন, তারা তাদের দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে পেট্রোলিয়াম গ্যাসের মজুদ বাড়াতে, বিশেষ করে ত্রিপুরা ও মিজোরামে বোতলজাত (পেট্রোলিয়াম গ্যাস) প্ল্যান্টের জন্য বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে ট্রানজিট সুবিধায় এলপিজি পরিবহন করতে চান।

ইন্ডিয়ান অয়েল জানিয়েছে, তারা চট্টগ্রাম থেকে অয়েল ট্যাঙ্কার ও ট্রাকের মাধ্যমে ‘বাল্ক এলপিজি’ বাংলাদেশের সড়কপথ ব্যবহার করে ত্রিপুরার প্ল্যান্টে নিতে চায়। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শুল্ক, কর ও ট্যারিফ পরিশোধেও সম্মত রয়েছে সংস্থাটি। আর চট্টগ্রাম থেকে সড়কপথে এলপিজি ট্রানজিটের বিনিময়ে বাংলাদেশকে কী পরিমাণ ট্যারিফ দিতে হবে তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে চিঠিতে। ইন্ডিয়ান অয়েল আরও বলেছে, তারা টোটালগ্যাজের মাধ্যমে ওই এলপিজি আমদানি করবে, যাদের চট্টগ্রাম পর্যন্ত এলপিজি আমদানি সুবিধা রয়েছে। ওই সংস্থাটি (টোটালগ্যাজ) ইন্ডিয়ান অয়েলকে নিশ্চিত করেছে, বাংলাদেশের চাহিদা মেটানোর পরও তাদের কাছে অনেক বেশি এলপিজি উদ্বৃত্ত থাকে। ওই উদ্বৃত্ত এলপিজি তারা ভারতকে দেবে। ইন্ডিয়ান অয়েলের চিঠি প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের সময় দুই দেশের বাণিজ্য চুক্তি সংশোধন করে সেখানে ট্রানজিট সুবিধার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ওই চুক্তির আওতায় এলপিজি ট্রানজিটের সুযোগ চেয়েছে ইন্ডিয়ান অয়েল। তাদের প্রস্তাব পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া সড়কপথে ট্রানজিট সুবিধা দিতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। এর আগে গত আগস্টে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে স্টিল ও সার পরিবহনের সুবিধা চেয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিল ভারতের অন্যতম বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান টাটা গ্রুপ। টাটা জানিয়েছিল, তারা তাদের পণ্য কলকাতার হলদিয়া বন্দর থেকে জাহাজযোগে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথ ব্যবহার করে আশুগঞ্জ বন্দরে আনবে। এরপর ওই পণ্য আবার ট্রাকে করে বাংলাদেশের সড়কপথ ব্যবহার করে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় পৌঁছাবে। চিঠিতে কী পরিমাণ স্টিল পরিবহন করা হবে তার কোনো উল্লেখ না থাকলেও ৩০ হাজার মেট্রিক টন সার পরিবহনের কথা উল্লেখ করা ছিল।

সর্বশেষ খবর