শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

নাটোরে আওয়ামী লীগে সংঘর্ষ নিহত ১

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের সিংড়া উপজেলার ইটালী ইউনিয়নের আগ-তিরোইল গ্রামে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আবদুল হান্নান (৪০) নামে এক কর্মী নিহত হয়েছেন। এ সময় হামলাকারীরা অপর পক্ষের প্রায় ৩৫টি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটায়। এ সময় ১৫ জন আহত হন। জড়িত সন্দেহে ১৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিংড়া উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিকুল ইসলাম শফিকের পোস্টার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে সোমবার উভয় পক্ষে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে ইটালী ইউপি চেয়ারম্যান ও সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান আরিফের ১০ জন সমর্থক আহত হন। এ ঘটনার জের ধরেই বুধবার রাত থেকে এ গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করতে থাকে। গতকাল সকাল ৭টার দিকে ৫০-৬০ জন বহিরাগত সন্ত্রাসী লাঠি ও দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গ্রামে হামলা ও ভাঙচুর শুরু করে। প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী এ হামলা ও লুটপাটের সময় বাধা দিতে গিয়ে আবদুল হান্নান (৪০) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী নিহত ও ১৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে জুলহাস (৪০), মোতালেব (৪০), ইয়াছিন (৩৫), সেলিম (৩৩), বাছা বেগম (৬০), মতিজানসহ (৫০) ১০ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর জড়িত সন্দেহে পুলিশ আগ-তিরোইল গ্রাম থেকে ১৬ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিংড়া থানায় নিয়ে গেছে। ঘটনার সময় আগ-তিরোইল গ্রামের আবদুস সাত্তার প্রামাণিক, আবদুস সামাদ, লুলু সর্দার ও হাসানের বাড়িসহ ৩৫টি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে হামলাকারীরা। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, হামলাকারীরা ইটালী ইউপি চেয়ারম্যান ও সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান আরিফের সমর্থক। নিহত ও আহতরা ইউনিয়ন গত ইউপি নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম জিন্নার সমর্থক। সংঘর্ষের সময় ধারালো হাঁসুয়ার আঘাতে নিহত আবদুল হান্নান আগ-তিরোইল গ্রামের মৃত আবদুল করিমের ছেলে। পরে জেলা শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরের নিভৃত পল্লির এই গ্রামে রাস্তা না থাকায় বাঁশের সঙ্গে বেঁধে কাঁধে করে লাশ সিংড়ায় আনা হয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম জিন্না বলেন, আগের দিন রাতে ইটালী ইউপি চেয়ারম্যান ও সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান আরিফ ও তার ছোট ভাই উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লিখন আগ-তিরোইল গ্রামে এসে সোমবারের ঘটনার শোধ নিতে রক্তের বন্যা বইয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন। এর জের ধরেই এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। তিনি সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যার জন্য আরিফুর রহমান আরিফ ও তার ভাই লিখনকে দায়ী করেন। তবে আরিফুর রহমান আরিফ অভিযোগ অস্বীকার করে এসব ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন বলে দাবি করেন। সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন মণ্ডল জানান, নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুন্সি শাহাবুদ্দীনসহ ঘটনাস্থলে বিপুলসংখ্যক পুলিশ রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। নাটোরের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখার্জি সিংড়া উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আবদুল হান্নান নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও ৩৫টি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের বিষয়ে বলেছেন, এটি দৃশ্যমান কিছু নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর