বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

কেরলে ফের ‘বিফ ফ্রাই’

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

দিল্লিতে অবস্থিত কেরল গেস্ট হাউসের খাবারের তালিকায় ‘বিফ ফ্রাই’ নিয়ে দুই দিন ধরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজধানীর রাজনীতি। কেরল রাজ্য সরকারের নিজস্ব ভবনে পুলিশের প্রবেশ নিয়ে সরগরম দিল্লির পরিবেশ। পুলিশের অতি সক্রিয়তা নিয়ে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধেই তোপ দেগেছে আম আদমি পার্টি, তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিআইএমসহ বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। সেই বিতর্কের রেশ মিটতে না মিটতেই ফের মেন্যুতে ফিরে এলো ‘বিফ ফ্রাই’। গতকাল সকালেই কেরল রাজ্য সরকারের ওই ভবনটিতে খাবারের তালিকায় অন্যান্য খাবারের সঙ্গেই দেখা গেছে ‘বিফ ফ্রাই’ মহিষের মাংস। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী ওমান চন্ডী নিজেই এ দিন সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন ‘অনুমতি না নিয়ে দিল্লি পুলিশ যেভাবে ওই ভবনে প্রবেশ করেছে তা মেনে নেওয়া যায় না। সেখানে হানা (রেইড) দেওয়ার আগে তাদের অনুমতি নেওয়া উচিত ছিল’। তিনি আরও বলেন ‘আমরা আইন মেনেই চলব। আজ সকাল থেকেই সেখানে আবার মহিষের মাংস সরবরাহ করা হবে।’ হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোকে কড়া বার্তা দিয়ে গতকাল সকালেই  কেরলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ চেনিথালা বলেন ‘কেরল ভবনে  কোন খাবার পরিবেশন করা হবে সেটা রাজ্য সরকারই ঠিক করবে। এমনকি সেখানে মহিষের মাংস ফিরিয়ে আনা হবে কি না তাও স্থির করবে রাজ্য সরকার। বিজেপি কিংবা আরএসএস খাবারের তালিকা ঠিক করে দিতে পারে না। সম্পূর্ণটাই ঠিক করবে কেরল রাজ্য সরকার’।

গত সোমবার সন্ধ্যায় ওই গেস্ট হাউসে খাবারের তালিকায় মালয়ালম ভাষায় ‘বিফ ফ্রাই’ লেখা শব্দটি দেখেই পুলিশে ফোন করে বিষয়টি জানায় হিন্দু সেনা সমর্থিত তিন যুবক।  ফোন পেয়ে দ্রুত সেখানে পৌঁছায় প্রায় ২০ জন পুলিশের একটি দল। গরুর মাংসের খোঁজে শুরু হয় অভিযান। যদিও  কেরল ভবন কর্তৃপক্ষ জানায়, বিফ ফ্রাই লেখা থাকলেও সেখানে গরুর মাংস নয়, তারা মহিষের মাংস পরিবেশন করেছেন এবং বহু বছর ধরেই তারা মহিষের মাংস পরিবেশন করে আসছেন। পুলিশি অভিযানেও সেখানে গরুর মাংসের  কোনো খোঁজ মেলেনি। যদিও ওই ঘটনার পরই খাবারের তালিকা থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল মহিষের মাংসও। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কেরল ভবনের নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছিল। কেরল ভবনে পুলিশের এই অতি সক্রিয়তা নিয়েই সরব হয়ে ওঠে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। ওই ঘটনায় কেরলের মুখ্যমন্ত্রী এতটাই ক্ষুব্ধ হন যে, দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লেখেন ওমান চন্ডী। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবাই ওই ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ওপর আঘাত বলে বর্ণনা করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর