শিরোনাম
রবিবার, ১ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

এ লড়াইয়েও জিততে হবে

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় বাস্তবায়ন ও নিরাপত্তা নিয়ে গোলটেবিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

এ লড়াইয়েও জিততে হবে

রাজধানীর গুলশানের স্পেক্ট্রা কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে অতিথিদের একাংশ - বাংলাদেশ প্রতিদিন

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে আর কোনো ছাড় প্রদান কিংবা কালক্ষেপণের সুযোগ নেই। যত দ্রুত সম্ভব এই বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে রায়ও বাস্তবায়ন করতে হবে। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে যেভাবে বিজয় অর্জন করেছি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের লড়াইয়েও তেমনি আমাদের বিজয়ী হতে হবে। এমনই মন্তব্য করেছেন দেশের প্রবীণ শিক্ষাবিদ, নিরাপত্তা বিশ্লেষক, সাবেক আমলা, ইতিহাসবিদ, আইনজীবী, ইসলামী চিন্তাবিদ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। গতকাল ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় বাস্তবায়ন ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা উঠে আসে। রাজধানীর গুলশানের স্পেক্ট্রা কনভেনশন সেন্টারে এর আয়োজন করে রিজিওনাল অ্যান্টি টেররিস্ট রিসার্স ইনস্টিটিউট (রাত্রি)। বক্তারা বলেন, আমাদের দেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থা নিয়ে বিদেশিরা নাক গলাচ্ছে, এটি দেশের জন্য অসম্মানজনক। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন একটি বিশেষ গোষ্ঠীর পক্ষে একতরফাভাবে এখতিয়ারবহিভর্‚ত মন্তব্য করছে। তারা কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে? এটি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার শামিল। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাত্রির নির্বাহী পরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার (অব.), বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাফর ইমাম বীর বিক্রম, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ওয়ালিউর রহমান, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মো. আবদুর রশীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, অধ্যাপক জিয়া রহমান, অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবীর, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক ড. এম এ হাসান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ড. তুরিন আফরোজ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের সভাপতি হাফেজ মাওলানা জিয়াউল হাসান, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ এম আমিনুদ্দিন, ব্যারিস্টার আহসান হাবীব ভ‚ঁইয়া প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জিনাত হুদা। মিডিয়া পার্টনার একাত্তর টেলিভিশন ও বাংলাদেশ প্রতিদিন। অনুষ্ঠানে অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে যারা কথা বলছে, তারা শুধু এই সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলছে না, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও বলছে। তারা রাষ্ট্রের শত্র“। সম্মিলিতভাবে তাদের রুখতে হবে। মূল প্রবন্ধে মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার (অব.) বলেন, বাংলাদেশকে কেউ জঙ্গিরাষ্ট্র বানাতে পারবে না। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দণ্ড কার্যকরও কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। কর্নেল (অব.) জাফর ইমাম বীর বিক্রম বলেন, বাংলাদেশে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে এটি আর কোনো ব্যক্তি বা দলের বিরুদ্ধে সীমাবদ্ধ নেই। বরং পুরো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। সুতরাং আইএস বা জঙ্গি বিতর্ক নিয়ে বসে না থেকে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ওয়ালিউর রহমান বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম যেভাবে এগোচ্ছে তাতে তা শেষ হতে হয়তো ২০ বছর লাগবে। এভাবে এগোলে আমরা বিচার শুরু করেছি কেন? শাহরিয়ার কবীর বলেন, একাত্তরে হত্যাকাণ্ড হয়েছে, হত্যাকারীরা বাংলাদেশের, ভিকটিমরা বাংলাদেশের, বিচারব্যবস্থা এ দেশের। আমাদের বিচারব্যবস্থা নিয়ে কথা বলার অধিকার কারও নেই। এখানে মৃত্যুদণ্ড আছে তা নিয়ে কথা বলার অধিকার কারও নেই। অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় বাস্তবায়নের সময় যত ঘনিয়ে এসেছে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে ষড়যন্ত্রের জাল ততই বিস্তৃত হচ্ছে। সার্বিক নিরাপত্তা সংকট ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাস্তবায়ন একই সূত্রে গাঁথা। ড. তুরিন আফরোজ বলেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে বলতে চাই, আপনারা কার টাকায় চলেন? কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেন? মেজর জেনারেল (অব.) মো. আবদুর রশীদ বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যত ঝুলতে থাকবে দেশের মানুষের নিরাপত্তা ততই ঝুঁকিতে পড়বে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর