মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

দলীয় প্রতীকে দুই কোটি ব্যালট ছাপানোর প্রস্তুতি ইসির

পৌর নির্বাচন

গোলাম রাব্বানী

দলীয় প্রতীকে দুই কোটি ব্যালট ছাপানোর প্রস্তুতি ইসির

দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে পৌরসভা নির্বাচনের তিনটি পদে ব্যালট পেপার ছাপানো নিয়ে সরকারি তিনটি প্রেসের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন উপযোগী পৌরসভার ৩ হাজার ৭০০ পদে ২ কোটিরও বেশি ব্যালট পেপার ছাপাতে  হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এদিকে এ ক্ষেত্রে আগাম প্রস্তুতি হিসেবে অন্যান্য নির্বাচন সামগ্রী ছাপানোর বিষয়েও নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। গতকাল ইসির সম্মেলনকক্ষে অতিরিক্ত সচিবের সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দল ভিত্তিতে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে যে কোনো দিন অধ্যাদেশ করতে পারে সরকার। ডিসেম্বরের শেষ দিকে এ নির্বাচন করতেই ইসি এসব নির্দেশনা দিয়েছে। ইসির কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনের কাজে ব্যবহৃত হয় তেমন ফরম, প্যাকেট, ম্যানুয়েল, নির্দেশিকা, ব্যালট পেপার ও অন্যান্য সামগ্রী মুদ্রণ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে এ সভা হয়েছে। সভায় বিজি প্রেস, বাংলাদেশ নিরাপত্তা মুদ্রণালয়, গভর্নমেন্ট প্রিন্টিং প্রেসের প্রতিনিধি এবং মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদফতর, বাংলাদেশ স্টেশনারি অফিসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। অধ্যাদেশ হওয়ার পর সামঞ্জস্য রেখে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা ও আচরণ বিধিমালা প্রেসে ছাপানোর জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, দলভিত্তিক নির্বাচনের উদ্যোগ চলায় এখনো ব্যালট পেপার ছাপানো হয়নি। সাধারণত নির্দলীয় নির্বাচনের সময় তফসিলের আগেই স্থানীয় সরকারের ব্যালট পেপার মুদ্রণ সেরে ফেলা হয়। ডিসেম্বরে ভোট অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে কী পরিমাণ ব্যালট পেপার লাগবে, কত সময়ে ছাপাতে হবে, ওই সময়ে সব ব্যালট পেপার ছাপানো সম্ভব কিনা, তা যাচাই শুরু হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইসি কর্মকর্তা জানান, দলীয় ভিত্তিতে নির্বাচন হলেও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর নির্ধারিত সময়ে কয়েক কোটি ব্যালট পেপার ছাপাতে একটু কঠিন হবে, তবে অসম্ভব নয়। এখন প্রেসগুলো আমাদের চাহিদা পর্যালোচনা করে কয়েক দিনের মধ্যে অবস্থান জানাবে। দলীয় ভিত্তিতে ভোট না হলে দ্রুতই ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজও শুরু করে দেওয়া হবে, বলেন এই কর্মকর্তা।

কম বয়সীরা পাবে স্মার্টকার্ড দ্বিতীয় প্রকল্প হাতে নিচ্ছে ইসি : ভোটারযোগ্য নাগরিকদের হাতে স্মার্টকার্ড দিতে না পারলেও কম বয়সীদের স্মার্টকার্ড দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এ বছর হালনাগাদে ১৫ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, যারা ২০১৮ সালের মধ্যে তালিকাভুক্ত হবে। এ জন্য দ্বিতীয় একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত রবিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ এ বিষয়ে বলেছেন, আঠারোর কম বয়সীদেরও স্মার্টকার্ড দেওয়ার জন্য নতুন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে তাদের স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হবে। ১৮ বছরের কম বয়সীদের স্মার্টকার্ড দিতে দ্বিতীয় প্রকল্পের (আইডেনটিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস-আইডিয়া-টু) জন্য ১ জুন বিশ্বব্যাংকের কাছে প্রায় ২৫ কোটি ডলার আর্থিক সহায়তার একটি প্রস্তাব পাঠায় ইসি। ১৬ কোটির বেশি জনসংখ্যার বাংলাদেশে বর্তমানে ভোটার তালিকায় রয়েছে ৯ কোটি ৬২ লাখ নাম।

গত বছর ভোটার তালিকা হালনাগাদে ১৯৯৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে জন্ম নেওয়া ৬৭ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করে ইসি। স্মার্টকার্ড প্রকল্পের চুক্তির ১০ মাস পার হলেও উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজ শুরু হয়নি। ইতিমধ্যে ভোটার করার সময় নাগরিকদের দুই হাতের চার আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হয়েছে। আগামীতে তথ্যভাণ্ডারের বেশি সঠিকতা নিশ্চিতে নাগরিকদের ১০ আঙ্গুলের ছাপের পাশাপাশি দ্বিতীয় বায়োমেট্রিক হিসেবে চোখের কর্ণিকার প্রতিচ্ছবি (আইরিশ) সংগ্রহ করা হবে। রবিবার ঢাকার জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় স্মার্টকার্ড বিতরণের বিষয়ে পরামর্শ নেয় ইসি। বৈঠক শেষে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, কবে থেকে স্মার্টকার্ড বিতরণ করা যাবে তা বলা যাচ্ছে না। এটা অনেক বড় কাজ। দেড় বছর ধরে কার্ড ছাপানো লাগবে। তবে কিছু স্মার্টকার্ড মুদ্রণ হলে আমরা বিতরণে যাব। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করা হলেও স্মার্টকার্ড ভিন্নভাবে দেওয়ার কথা জানান সিইসি। কাজী রকিব বলেন, লেমিনেটেড এনআইডি ফেরত নিয়ে স্মার্টকার্ড দেওয়া হবে। এখন ভোটারদের ১০ আঙ্গুলের ছাপ ও আইরিশের প্রতিচ্ছবি নেওয়া হবে। এ জন্য নির্ধারিত নিবন্ধন কেন্দ্রে এসে বিতরণ কাজ করা হবে, পাশাপাশি নতুন তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এর পাশাপাশি আঠারোর কম বয়সীদেরও স্মার্টকার্ড দেওয়ার কথাও জানান তিনি।

 

 

 

সর্বশেষ খবর